প্রতিবেদন : হুমকি যে এভাবে বাস্তব হবে তা বোধহয় ভাবেননি হতভাগ্য শ্রদ্ধা ওয়াকার (Shraddha Walker Murder Case)৷ দিল্লির এই খুনের ঘটনায় গোটা দেশ তোলপাড়। ১৮ মে আফতাব পুনাওয়ালা তার লিভ পার্টনার শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তারপর প্রেমিকার দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটে ছতরপুরের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়। প্রায় ছ’মাস আগের এই খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই পুলিশের হাতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর যে এরকম পরিণতি হতে পারে বছর দুই আগেই তা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন শ্রদ্ধা। এমনকী তা নিয়ে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন৷
বুধবার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দু’ বছর আগে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের ভাসাইতে পুলিশের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শ্রদ্ধা (Shraddha Walker Murder Case)। ভাসাই পুলিশকে লেখা চিঠিতে মৃত তরুণী তখনই জানিয়েছিলেন, আফতাব ওইদিনই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করে। ভয় দেখিয়ে হুমকি দেয় যে, খুন করে টুকরো টুকরো করে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। গত ৬ মাস ধরে আফতাব তাঁর উপর অত্যাচার চালাচ্ছিল বলেও অভিযোগে সেসময় জানিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। ঘনিষ্ঠদেরও শ্রদ্ধা বলতেন, আমি আর ওর সঙ্গে থাকতে চাই না। কারণ ও আমাকে মেরে ফেলতে চায়। আমার কোনওরকম ক্ষতি হলে তার জন্য একমাত্র আফতাবই দায়ী থাকবে।
আরও পড়ুন-শ্মশানবন্ধু থেকে রুদালি সব মিলবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দৌলতে
বছর দুয়েক আগেকার চিঠিতে শ্রদ্ধা আরও লিখেছিলেন, আফতাবের বাবা-মা জানতেন যে ও আমাকে মারে এবং আমায় খুন করতে চায়। আমরা যে একসঙ্গে থাকি তাও তাঁরা জানেন। সপ্তাহান্তে তাঁরা মাঝে মাঝে এখানে আসেন। ওই চিঠিতেই শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন, তাঁদের বিয়েতে আফতাবের সম্মতি ছিল। খুব তাড়াতাড়ি তাঁদের বিয়ে হতে পারে বলেই তিনি তখনও আফতাবের সঙ্গে ছিলেন। দিল্লি পুলিশের হাতে এই তথ্য উঠে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই এই খুনের তদন্ত অন্যদিকে মোড় নিল। শ্রদ্ধাকে খুনে মূল অভিযুক্ত আফতাবের বাবা-মা ও পরিবারের অন্যদের বয়ান রেকর্ড করার কাজ শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। প্রয়োজনে আফতাবের পরিবারকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
দিল্লি পুলিশ এখন শ্রদ্ধার পুরনো লিখিত অভিযোগটিও খতিয়ে দেখছে। ভাসাই পুলিশ ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ করেছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত যত গড়াচ্ছে ততই পুলিশের কাছে শ্রদ্ধার উপর আফতাবের অত্যাচারের বিষয়ে নানা তথ্য উঠে আসছে। জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধা ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের আফতাবের অত্যাচারের কথা জানিয়েছিলেন। শ্রদ্ধা সেই সময় তাঁর বন্ধু তথা সহকর্মীকে নিজের আঘাতপ্রাপ্ত চেহারার ছবিও পাঠিয়েছিলেন। এমনকী অভ্যন্তরীণ ক্ষত নিয়ে তাঁকে একবার হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয়েছিল।