প্রতিবেদন : ভাড়াটেদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে শহরের বিপজ্জনক বাড়ি এবার নিজেই ভাঙতে পারবে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipality- Assembly)। এই মর্মে বিধানসভায় কলকাতা পুরসভা আইনের একটি সংশোধনী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গৃহীত হল। সংশোধনী বিলের উপরে আলোচনার জবাবি ভাষনে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় শহরে থাকা অনেক বিপজ্জনক বাড়িতেই ভাড়াটিয়ারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। বারবার নোটিশ দিলেও ভেঙে ফেলার ক্ষমতা না থাকায় পুরসভাকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে হত। পুরসভার (Kolkata Municipality- Assembly) তরফে বাড়িটিকে চিহ্নিত করে বোর্ড লাগানো হলেও তাঁরা সেখান থেকে সরতে চান না। নতুন সংশোধিত আইনে পুরনিগমকে বাড়িটি ভেঙে ফেলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ি ভাঙার আগে সেখানে বসবাসকারীরা যতটা জায়গা নিয়ে বসবাস করছেন তাঁদের সেই পরিমাণ জায়গা উল্লেখ করে বসবাসের শংসাপত্র দেওয়া হবে। ওই জায়গায় নতুন বাড়ি তৈরি হলে তাঁদের সমপরিমাণ জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অবশ্য বাড়ির মালিককেও দেওয়া হবে সমপরিমাণ জায়গা। পুরমন্ত্রী আরও বলেন, এই বিলে ইউনিট এরিয়া কমিটি করা হয়েছে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে। মন্ত্রী জানান, এ ছাড়াও এই বিলের ফলে জমি রেজিস্ট্রি করলে সরাসরি তার মিউটেশন হয়ে যাবে। তাঁর দাবি, এটা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা আসবে। লক্ষণীয়, পুরনো বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে মহানগরী কলকাতায়। প্রাণহানিও ঘটেছে। সুরক্ষার প্রশ্নেই তাই কোনও আপস করতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা। মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম বারবার সতর্ক করেছেন বিপজ্জনক বাড়িগুলির মালিকদের। অবিলম্বে সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছেন। নিজেদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার স্বার্থেই সরে যেতে বলেছেন বাসিন্দাদের। এবং অবশ্যই ভাড়াটিয়াদেরও। এ ব্যাপারে জনমত গঠন করতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে পুরসভার পক্ষ থেকে। কিন্তু অনেকেই তাতে কর্ণপাত করেননি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই থেকে গিয়েছেন সেইসব বিপজ্জনক বাড়িতে। নাগরিকদের স্বার্থেই এবারে তাই বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিল রাজ্য।