প্রশাসনের হুমকি উপেক্ষা করেই তীব্র হচ্ছে শি–বিরোধী বিক্ষোভ

সম্প্রতি চিনে নতুন করে ফের করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। হুনান-সহ আরও বেশ কয়েকটি প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

Must read

প্রতিবেদন : লকডাউন ও জিরো কোভিড নীতির বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব বিক্ষোভের সাক্ষী চিন। এই কমিউনিস্ট দেশে সাধারণত সরকারের সমালোচনা করা মানেই কড়া শাস্তি। কিন্তু শাস্তির ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করেই যেভাবে সে দেশের সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন তাতে আন্তর্জাতিক মহলও অবাক হয়েছে। শুধু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোই নয়, যেভাবে প্রেসিডেন্ট হচ্ছে শি জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে তা সকলকেই অবাক করেছে। কোনও ছোট গ্রাম বা শহর নয়, খোদ রাজধানী বেজিংয়েই জিনপিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে ঘনঘন স্লোগান উঠছে জিনপিং দূর হটো।

আরও পড়ুন-আগামী ৩রা ডিসেম্বর কাঁথিতে জনসভা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

আমজনতার দাবি, করোনা প্রতিরোধ করার নামে সরকার যা ইচ্ছে তাই করতে পারে না। সরকার লকডাউন ও বিধিনিষেধ জারি করে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারটাই কার্যত কেড়ে নিচ্ছে। সেই বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হলেন সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক সাংবাদিক। হুনান প্রদেশের পুলিশ ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন-হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, রাজ্যে চলবে দুয়ারে রেশন

সম্প্রতি চিনে নতুন করে ফের করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। হুনান-সহ আরও বেশ কয়েকটি প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। রোগ ঠেকাতে তাই কড়া লকডাউন জারি করেছে সরকার। কড়া বিধিনিষেধের ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে বহু মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। প্রতিবাদে শনিবার সাংহাই, হুনান, বেজিং-সহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে প্রবল বিক্ষোভ। মানুষের দাবি, লকডাউন নয়, তাঁরা কাজ চান। তাঁরা স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে চান। বিক্ষোভের সেই খবর সম্প্রচার করছিলেন বিবিসির সাংবাদিক এড লরেন্স। তিনি যখন ওই খবর প্রচারের কাজ করছিলেন সে সময় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রকাশ্যেই হাতকড়া পরিয়ে তাঁকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে বেশ কয়েক ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে কিল, চড়, ঘুসি, লাথি মারা হয় বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

বিষয়টি জানার পরেই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিবিসির শীর্ষকর্তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনও হুনান প্রদেশের পুলিশের ভূমিকার কড়া নিন্দা করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনায় প্রবল চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত লরেন্সকে মুক্তি দেয় পুলিশ। তবে কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। এমনকী, পুলিশ এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেনি। তবে পুলিশের একাংশের দাবি, ভিড়ের মধ্যে ওই সাংবাদিক কোভিডে আক্রান্ত হতে পারেন এই আশঙ্কার কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
তবে বিবিসি এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ। বিবিসি এক বিবৃতি জানিয়েছে, লরেন্সকে চিনের পুলিশ লাথি ও চড়-থাপ্পড় মেরেছে। বেশ কয়েক ঘণ্টা তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। যেভাবে কর্তব্যরত এক সাংবাদিককে আক্রমণ করা হয়েছে তাতে তাঁরা উদ্বিগ্ন।

 

Latest article