সংবাদদাতা, সাগর : প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে মিনি টর্নেডো আছড়ে পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দিরচত্বরে। সোমবার সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ এই টর্নেডো আছড়ে পড়ে কপিলমুনি মন্দিরের ২ নম্বর রাস্তার মাঝামাঝি এলাকায়। প্রায় দশ ফুট ব্যাসার্ধের এই ভয়ঙ্কর ঝড়ে দেড় মিনিটের মতো স্থায়ী ছিল। ঝড়ের দাপটে পঞ্চায়েত সমিতির একটি কটেজ ও বেশ কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কটেজের প্রায় চল্লিশটি টিন উড়িয়ে নিয়ে ফেলে বহুদূরে। কাছেই গাছ ও বিদ্যুতের তারেও কয়েকটি আটকে যায়। তবে মানুষের কোনও ক্ষতি হয়নি। খবর পেয়ে সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল ঘটনাস্থলে যান।
আরও পড়ুন :বৃষ্টিতে নাকাল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ
সাগর উপকূল থানার পুলিশ হাজির হয়। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ শুরু হয়েছে। নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্তের জেরে কার্যত বিপর্যস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা। জেলা জুড়ে চলছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত। রবিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাতভর বৃষ্টি হচ্ছে। জেলার উপকূলবর্তী সুন্দরবনে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাস বইছে। সোমবার ছিল পূর্ণিমা। ফলে আজ থেকে সুন্দরবনের নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাবে। বৃষ্টি ও কোটালের জোড়া ফলায় আবারও দুর্যোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে। গোসাবায় একটি বাঁধ বেহাল হয়ে পড়েছে। মৎস্যজীবীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শহরতলি সোনারপুর, বারুইপুর, সুভাষগ্রাম, আমতলা, মহেশতলায় ভারী বৃষ্টির ফলে জল জমেছে। অনেক বাড়ি ও দোকানে জল ঢুকেছে। জেলার ১০টি ব্লক ও চারটি পুরসভা এলাকা বিপর্যস্ত। প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেড় হাজার মানুষকে ১৮টি ত্রাণশিবিরে তুলে আনা হয়েছে। ২২টি জায়গা থেকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। ৩৭টি কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়েছে। প্রায় ৩০০ বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। গ্রামীণ এলাকায় পুকুর, সবজিখেত, পানের বরজ জলমগ্ন। আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে ছিল। সকাল থেকে রাস্তাঘাট ছিল শুনশান। দোকানপাটও বন্ধ ছিল। জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়।