আসানসোল-কাণ্ডে প্রশ্ন, কেন আগাম সুরক্ষা? বেপরোয়া হচ্ছে অভিযুক্তরা

Must read

প্রতিবেদন : আগাম সুরক্ষা দেওয়ায় অভিযুক্ত বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে, এটা ন্যায়বিচার নয়। আসানসোলের বেআইনি সভায় ভয়ঙ্কর ঘটনার উল্লেখ করে নজিরবিহীনভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে সব ধরনের রক্ষাকবচ দেওয়া বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তোপ দাগলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন তিনি। একইসঙ্গে আসানসোলে (Asansol- Suvendu Adhikari) শুভেন্দুর কম্বল বিলি অনুষ্ঠানে এক শিশু-সহ তিনজনের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় অবিলম্বে শুভেন্দুকে গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছেন কুণাল। তাঁর কথায়, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাও এর নৈতিক দায় এড়াতে পারেন না। কারণ তিনিই শুভেন্দুকে আগাম সুরক্ষা দিয়ে রেখেছেন। এদিন কুণাল বারবার বলেন, বিচারব্যবস্থা ও বিচারপতিকে আমরা সম্মান করি। কোনও সমস্যা হলে সাধারণ মানুষ বলেন হাইকোর্টে যাব। আমিও আমার আইনজীবীকে বলি, হাইকোর্টে পিটিশন দাও বা চলো সুপ্রিম কোর্টে যাই। কিন্তু একমাত্র শুভেন্দুর মুখে শোনা যায়, আমি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে যাব। কেন, কীসের জন্য? কোন কারণে একজন বিশেষ বিচারপতির নাম গুরুত্ব পায়? আর তিনিই বা কোন আক্কেলে শুভেন্দুর ওপর সমস্ত এফআইআর-কে সুরক্ষাকবচ দিয়ে দিচ্ছেন? শুধু তাই নয় যে অপরাধ শুভেন্দু করেনি, পরের দিন তিনি কী করবেন জানেন না। তা অনুমান করে বলছেন, এফআইআর করা যাবে না। এটা কোন দেশের আইন? প্রশ্ন কুণাল ঘোষের। সাংসদ ও রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন তাঁর ট্যুইটে গোটা ঘটনা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি লিখেছেন, কলকাতার বিচারব্যবস্থার একাংশ একতরফা ভাবে একজন বিশেষ ব্যক্তিকে আগাম সুরক্ষা দিয়ে দিচ্ছে, যা শুধু নজিরবিহীন নয় অভূতপূর্বও।

আরও পড়ুন-কিডনি নিয়ে উদ্বেগ

তৃণমূল কংগ্রেসের প্রশ্ন, কোন আইনে শুভেন্দুকে (Asansol- Suvendu Adhikari) বারবার রক্ষাকবচ দেওয়া হচ্ছে? বলা হচ্ছে ভবিষ্যতেও এফআইআর করা যাবে না। দলের সাধারণ সম্পাদক কুণালের ঘোষের বক্তব্য, এতেই অবচেতন মনে বেপরোয়া হয়ে উঠছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি আইন মানছেন না। আইনকে পৈতৃক সম্পত্তি ভাবছেন। যেখানে মানুষের প্রাণহানির মতো ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। বিচারপতি মান্থার জানা উচিত, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, আদালত তদন্তের উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আদালত তদন্তের উপর নজরদারি করতে পারে। এক্ষেত্রে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তদন্তের উপর সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন।

এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই কুণাল ঘোষ শুভেন্দুর সাম্প্রতিকতম একটি ভিডিও দেখান। যেখানে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যাচ্ছে ১২, ১৪, ২১ তারিখ— তিনটি দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ। এরপরই কুণালের প্রশ্ন, যেখানে ১২ তারিখে সিবিআই হেফাজতে বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্তি লালন শেখের মৃত্যু। ১৪ তারিখ আসানসোলে শুভেন্দুর কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু। বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শুভেন্দু। ২১ তারিখ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি আমরা। আবার খারাপ কিছু না ঘটে! কারণ ও কথায় কথায় সিবিআই কবে কার বাড়ি যাবে সেই তারিখ বলে দিতে পারছে, তাহলে লালন শেখের মৃত্যুও ওর নির্দেশে হতেই পারে। তাই এই মামলার তদন্তে অবিলম্বে শুভেন্দুকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে হবে। তাঁর আরও সংযোজন, আসানসালে বিরোধী দলনেতা যাওয়ায় প্রোটোকলে পুলিশ ছিল। দিলীপ ঘোষও বলে দিচ্ছেন ব্যর্থতা উদ্যোক্তাদের। তাই কোনওভাবেই দায় এড়াতে পারে না শুভেন্দু। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এই অনুষ্ঠান হয়েছে। দিলীপবাবুও বলেছেন আরও বেশি প্রস্তুতি থাকা উচিত ছিল।

Latest article