প্রতিবেদন : রাজ্যে সাইবার অপরাধ দমনে এবং প্রতিরোধে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে পুলিশ। কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়, সাইবার প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্তদের খোয়া যাওয়া মোটা অঙ্কের টাকাও ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এবারে বিশেষ সাফল্য দেখাচ্ছে পুলিশ। একমাসে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ৫২ জন প্রতারিত ব্যক্তির হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে বিধাননগর সাইবার-পুলিশ (Bidhannagar Cyber-Police)। নিউটাউন এবং বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে প্রায় ২০০ জনকে। সিল করে দিয়েছে একডজনেরও বেশি ভুয়ো কলসেন্টার। প্রতারণামূলক অপরাধের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে পুলিশের সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার কারণ সাইবার অপরাধ।
প্রতিদিন নিত্যনতুন প্রযুক্তিতে নিত্যনতুন প্রতারণার কৌশল। সাধারণ মানুষ তো বটেই, অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বহু শিক্ষিত-সচেতন মানুষও। কখনও চাকরির প্রলোভন, কখনও স্বল্পমূল্যে দামি জিনিসের প্রলোভন, কখনও ব্যাঙ্কের নাম করে ফোন করে, মেসেজ দিয়ে ভুল বুঝিয়ে ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্ক হাতানো— এমন অজস্র লোক ঠকানোর ফাঁদ। সাইবার অপরাধীদের শায়েস্তা করাই যে এখন পুলিশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তা প্রথম থেকেই বলে আসছেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল। সেই অনুযায়ী অত্যাধুনিকতার মোড়কে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয় কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম সেলকে। পাশাপাশি বিধাননগর কমিশনারেটও বিশেষ গুরুত্ব দেয় সাইবার অপরাধীদের শায়েস্তা করার ব্যাপারে। লাগাতার অভিযানে একের পর এক ভুয়ো কলসেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। জালে ফেলে এমন অনেক প্রতারণা চক্রকে যারা এখানে বসেই প্রতারণার জাল ছড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও।
আরও পড়ুন-বিপাকে নিশীথ, সরছে বাবার নাম
এবারে সাইবার (Bidhannagar Cyber-Police) বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে পুলিশের অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে প্রতারিতদের অর্থ পুনরুদ্ধার। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, নোডাল অফিসার এবং আইনজ্ঞদের সঙ্গে এজন্য নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা। কেউ অনলাইন প্রতারণার ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করলেই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। ফ্রিজ করে দেওয়া হচ্ছে অ্যাকাউন্ট। তারপরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গাইডলাইন মেনে আদালতের সাহায্য নিয়ে টাকা উদ্ধার করে তা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার পালা। বাগুইআটির এক যুবককে বিদেশে মোটা বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে দফায় দফায় প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল একটি প্রতারণা চক্র। অভিযোগ পেয়ে সেই টাকা উদ্ধার করে অভিযোগকারীর হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। একইভাবে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা খুইয়েও পুলিশের তৎপরতায় তা ফিরে পেয়েছেন সামরিক বাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত অফিসার।