ভারত-চিন সমস্যা, মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক বিহারের ঘটনা একের পর বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনার দাবিতে নোটিশ দেওয়া হলেও তা গ্রহণ করছেন না রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়। একাধিক ইস্যুতে তাই মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা একত্রিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে সরব উঠলেন। অতীতে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানরা এই নোটিশে আলোচনা করতে দিয়েছিলেন বলে নজির তুলে ধরে জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
আরও পড়ুন-মেসি-এমবাপেতে মজে মা-বাবা, ছ’তলা থেকে পড়ে মৃত্যু শিশুর
সোমবার রাতেই প্রতিটি বিরোধী দল একটি করে বিষয়ে নোটিশ দেয় রাজ্যসভায়। সেই মতো তৃণমূল কংগ্রেস মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে, কংগ্রেস চিন ইস্যুতে, আরজেডি এবং জেডিইউ বিহারে বিষমদ পান করে মৃত্যু, শিবসেনা ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার অপব্যবহার, সমাজবাদী পার্টি উত্তরপ্রদেশের ইস্যুতে নোটিশ দেয়। বিরোধীদের সব নোটিশই খারিজ করে দেন চেয়ারম্যান৷ এরপরই প্রথা এবং বিধি তুলে ধরে রাজ্যসভায় সরব হন ডেরেক ও’ব্রায়েন। রাজ্যসভার বিধিতে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন নজির অনুযায়ী, যেখানে কোনও নজির পাওয়া যাবে না, সেক্ষেত্রে সাধারণ সংসদীয় রীতি মেনে সিদ্ধান্ত নেবেন। অথচ তা মানছেন না ধনকড়৷
আরও পড়ুন-চিনে করোনা ছড়াচ্ছে দ্রুত, রোজ আক্রান্ত ৬০ শতাংশ মানুষ
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিখুঁত বিরোধী সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়৷ বিহার ইস্যু নিয়ে ২৬৭ ধারার নোটিশ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তৃণমূলকে বিহারের ইস্যু তোলার অনুরোধ করেন আরজেডির মনোজ ঝা। বিহারে মঙ্গলবার মানবধিকার কমিশনের দল পাঠানো হয়েছে। জিরো আওয়ারে বক্তব্য রাখতে ওঠেন তৃণমূলের দোলা সেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বকেয়া নিয়ে বলার পর বিহারের প্রসঙ্গে দোলা বলেন, জাতীয় মানবধিকার কমিশন বিহার, বাংলায় যাচ্ছে। অথচ উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত বা কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে কখনও যায় না। সেই সময় প্রবল হট্টগোল করতে থাকেন বিজেপি সাংসদরা। এরপর দোলা সেনের নেতৃত্বে জিরো আওয়ার থেকে ওয়াকআউট করে সমগ্র বিরোধী দল। পরে দোলা সেন বলেন, মোরবিতে তো যায়নি মানবধিকার কমিশন! মনোজ ঝা নোটিশ দিলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী পক্ষের ওয়াকআউট।
আরও পড়ুন-ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ, দোষ প্রমাণে হতে পারে ৪০ বছরের কারাদণ্ড
এদিন রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ শান্তা ছেত্রী বিজনেস করেসপন্ডেন্ট নেটওয়ার্কে মহিলাদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। গত পাঁচ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার সেস বাবদ কত টাকা আদায় করেছে সে প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে চান শুভাশিস চক্রবর্তী। রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার বলেন, যেহেতু সেস এবং সারচার্জগুলি আয়ের বিকল্প উত্স হয়ে উঠেছে সুতরাং কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে এ নিয়ে বিভাজন হওয়া উচিত নয়। লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের যুব সমাজের মধ্যে ড্রাগের ব্যবহার ও চোরাচালান বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, দেশের পুলিশ অফিসারদের সাইবার ক্রাইম রোখার জন্য যথাযথ ট্রেনিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথাও।