প্রতিবেদন : রূপ : দেখতে গোলগাল নাদুসনুদুস। মেরুদণ্ড নেই। গলায় গেরুয়া উত্তরীয়।
ঠিকানা : কাঁথিতে
অসুখ : ভোট এলেই লাইট বন্ধ করে দেন। নিয়মিত ‘‘দুশো দুশো” চিৎকার করে মধ্যরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়েন। অকারণ ভাট বকতে ভালবাসেন। ডিসেম্বরে সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। তারপর লজ্জাবতী হয়ে মুখ লুকান। ক্যামেরায় ঠোঙা মুড়িয়ে ঘুষ নিতে দেখা যায়।
বিশেষ চিহ্ন : ‘‘অভিষেক” শব্দটি শুনলে দাঁত খিঁচিয়ে কামরাতে আসেন। ‘‘বেগম বেগম” করে হেঁচকি তোলেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেওয়া হলে বিরোধীতা করেন, কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়লে চুপ করে থাকেন।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রকে প্রশ্ন করুন কেন প্রাপ্য পাচ্ছেন না, পাত্রসায়রে মন্ত্রী শশী
এমন কোনো ব্যক্তিকে খুঁজে পেলে দ্রুত সন্ধান দিন।
এটা কোনও একজনের ‘নিরুদ্দেশ’ সংক্রান্ত তথ্য ও ওই ব্যক্তিকে সহজে চিহ্নিত করার জন্য তার বিশেষ আচরণ ও প্রতিভার বর্ণনা, যা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হোর্ডিং আকারে দেখা গিয়েছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার হোক কিংবা দক্ষিণের বর্ধমান। কিংবা উত্তর কলকাতার রাজপথ— ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে এই হোর্ডিংয়ে৷ সব ক’টি হোর্ডিংয়ে লেখার পাশাপাশি একজনের কার্টুন রয়েছে, যার অবয়ব খুবই চেনা। কিন্তু কোথাও তার নাম নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেলের তরফে এই নিরুদ্দেশ বার্তা। ভাল করে দেখলে বোঝা যাবে এ আসলে শুভেন্দু অধিকারীর নিরুদ্দেশ বার্তা৷ কিন্তু কেন এই হোর্ডিং? খোলসা করলেন দলের সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, যিনি লোডশেডিংয়ে জিতে বিধায়ক হন। যিনি ঘুষ নিয়ে ইডি-সিবিআই থেকে বাঁচতে অমিত শাহর পা ধরে বিজেপিতে যান। যিনি ডিসেম্বর ধামাকা বলে হাওয়ায় তরোয়াল ঘোরান। সরকার ফেলে দেবেন বলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সবই ফাঁকা আওয়াজ। সব ভোঁ-ভাঁ। কেথাও কিছু নেই। উল্টে বিরোধী দলনেতা ডিসেম্বরে যে তিনটি তারিখ বলে বাজার গরম করেছিলেন সেই দিনগুলির একটায় আসানসোলে কম্বল দেওয়ার লোভ দেখিয়ে অসহায় মানুষদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হল। আর একটি তারিখে লালন শেখ সিবিআই হেফাজতে রহস্যজনকভাবে মারা গেল৷ তৃতীয় তারিখে কাঁথিতে মুখ রক্ষা করতে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পাল্টা সভা করতে হল। এই যার হাল, তার উদ্দেশ্যে নিরুদ্দেশ বার্তা ছাড়া আর কিই-বা হতে পারে! বিজেপির নেতা-কর্মীরাও ওর কাণ্ড-কারখানা দেখে হাসছে। এই করতে গিয়ে নিজেও খোরাক হয়েছে আর এ-রাজ্যে বিজেপির অস্তিত্বকে আরও তলানিতে নিয়ে গিয়েছে। স্পষ্ট বক্তব্য দেবাংশুর।
আরও পড়ুন-গোপালপুর সমবায় তৃণমূলের, কুপোকাত রাম-বাম
বৃহস্পতিবার দিনভর সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ব্যঙ্গচিত্র ও মিম ঘুরে বেড়িয়েছে শুভেন্দুকে নিয়ে। তা নিয়ে কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। এসব নিয়ে এদিন ট্যুইটার ট্রেন্ডে তৃণমূল কংগ্রেস ছিল ১ নম্বরে। এসব দেখেশুনে হজম করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না লোডশেডিং অধিকারী তথা বিরোধী দল নেতার।