নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মেগা বৈঠকে বিরোধীদের তুমুল আক্রমণ করে দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, বিরোধী আসনে থাকাকালীন কখনও ডেসট্রাক্টিভ কিছু করিনি। সব সময় কনস্ট্রাক্টিভ কাজ করেছি। একই সঙ্গে তিনি দেশে ধর্ম নিরপেক্ষ, সংহতির পক্ষে সওয়াল করেন।
রাজ্যে সরকার বা শাসকদলকে আক্রমণ করতে আজকাল লাগাতার কুকথা বলেছে বিরোধীরা। সেই প্রবণতার বিরুদ্ধে এদিন সরব হন তৃণমূল সুপ্রিমো (TMC Supremo Mamata Banerjee)। তাঁর মতে, এ রাজ্যে বিরোধীরা সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে যে ধরনের কুকথার ব্য়বহার করে, তা সারা ভারতে কোথাও হয় না। এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “আজকে যাদের কাজ নেই কর্ম নেই, অকাজ – কুকাজ, এবং বড় বড় কথা বলে বেড়ান। তাদের আমি বলব, আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম আমরা কিন্তু কখনও ডেসট্রাক্টিভ কিছু করিনি। কন্সট্রাক্টিভ করেছি। একটা রাজনৈতিক দল যখন তৈরি হয় তখন তার অনেক দায়বদ্ধতা থাকে। দায়বদ্ধতাকে মানতে গিয়ে কোথাও কোথাও অনেক কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। আমরা বিরোধী আসনে থাকাকালনীন যেমন ডেডিকেটেড ছিলাম। মানুষের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে একমত হয়েছিলাম। আজও সেই সংগ্রামই করতে হচ্ছে”।
আরও পড়ুন: দলের নেতা-কর্মীদের নিবিড় জনসংযোগের নির্দেশ তৃণমূল সুপ্রিমোর
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে যে ধরনের কুকথা বলছে বিরোধীরা, তাতে তিনি অত্যন্ত বিরক্ত- স্পষ্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুটা হতাশার সুরেই তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ”মা মাটি মানুষের সরকার ১১ বছর হল। তৃণমূল কংগ্রেস ২৫ বছর পার করেছে। অনেক কর্মী, সমর্থককে হারিয়েছি। সংগ্রাম করতে গিয়ে জীবন কেটে গিয়েছে। সিঙ্গুর- নন্দীগ্রাম অনেক পরে। ৯২ সালে ফিরে যান, ৯৩ সালের একুশে জুলাই গুলি চলেছিল। হাওড়া, বেহালা, কোচবিহার, রাজারহাট, শান্তিপুরে গুলি চলল। সেসব দিন অনেক কষ্টে পার করেছি। ধ্বংসাত্মক কিছু করিনি, গঠনমূলক কাজ করেছি। বিরোধীদের কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। বিরোধীরা এখানে এক একটা বিষয়ে যে কুকথা বলে, গোটা দেশে কোথাও হয় না।”
বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যকেই ভারতের ঐতিহ্য। সেই কারণে সেটা রক্ষা করাই দায়িত্ব। রাজনীতি যাই হোক। যে পরিস্থিতি আসুক। মানুষের জন্য উন্নয়নের বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এটা সরকারের বিষয় না। এটা মানুষের বিষয়। সংবিধানেই আমাদের সার্বভৌমত্বের কথা বলা রয়েছে মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
কেন্দ্রে কাছে এখনও ৬০০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে রাজ্যের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে সে কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গরিব মানুষ কাজ করছে কিন্তু টাকা পাচ্ছে না। মার্চে কাজ হলে, ডিসেম্বরে টাকা পাঠালে তার টেন্ডার হবে কখন! এটা তো নন কোঅপারেশন। প্রধানমন্ত্রীকে আগেই চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর মা মারা গেছেন। এখন শোকসপ্তাহ চলছে। এই নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করব না। শেষ বৈঠকে আমি এই বিষয়ে কথা তুলেছিলাম।”