নয়াদিল্লি : নোটবন্দির বৈধতা নিয়ে সর্বসম্মত রায় দিতে পারল না সুপ্রিম কোর্ট। সাংবিধানিক বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বৈধতা পেলেও স্পষ্টভাবে তাতে ভিন্নমত জানিয়েছেন বিচারপতি নাগারত্না। তাঁর কড়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের বিপক্ষে গিয়েছে। ফলে সর্বসম্মতি ছাড়াই শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ খারিজ করে দিয়েছে এই সংক্রান্ত ৫৮টি আবেদন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই উন্নয়ন
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত বাতিল করা যাবে না। কেন্দ্রের পেশ করা তথ্যের ভিত্তিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ছয় মাস ধরে সরকার এবং আরবিআইয়ের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পাঁচ বিচারপতির মধ্যে চারজন সরকারের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মেনে নিলেও একজন স্পষ্ট ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। নোটবন্দির বৈধতা খতিয়ে দেখার সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এস আবদুল নাজির, বি আর গাভাই, এ এস বোপান্না, ভি রামাসুব্রহ্মণ্যম এবং বি ভি নাগরত্না। বিচারপতি বি আর গাভাই সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় পড়ে বলেন, নোটবন্দির উদ্দেশ্য সফল হয়েছে কি না তা এই মামলায় প্রাসঙ্গিক নয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াটি কেবলমাত্র বিচার্য।
আরও পড়ুন-৯০ দিনে বাড়ি না হলে জরিমানা
সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের বেঞ্চে স্পষ্টভাবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন বি ভি নাগারত্না। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত বেআইনি। একটিমাত্র নির্দেশ জারি করে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোটের পুরো সিরিজ বাতিল করার বিষয়টি গুরুতর। শুধুমাত্র একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা করতে পারে না সরকার। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আইনসভা বা সংসদে অনুমোদন করে আনা উচিত ছিল। আরবিআই-এর দেওয়া রেকর্ড থেকে এটা স্পষ্ট যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্বশাসিতভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি, সবকিছুই ঘটেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরবিআই আইনের ২৬(২) ধারার অধীনে ‘যে কোনও সিরিজ’ বলতে ‘সমস্ত সিরিজ’ বোঝাতে পারে না। ২৬(২) ধারাটি শুধুমাত্র মুদ্রা বা নোটের একটি নির্দিষ্ট সিরিজের জন্য হতে পারে এবং নির্দিষ্ট মূল্যের কারেন্সি নোটের গোটা সিরিজের জন্য নয়।
আরও পড়ুন-পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস তালিকায় বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর মোদি সরকার ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করেছিল। বিচারপতি এস আবদুল নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ৭ ডিসেম্বর রায় সংরক্ষণ করেছিল। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে আদালত নোটবন্দিকে বৈধ বললেও এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে হল না। নোটবন্দিকে অবৈধ বলেছেন বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি নাগারত্না। উল্লেখ্য, বিচারপতি নাজির ৪ জানুয়ারি অবসর নিচ্ছেন।