প্রতিবেদন : জি-২০ সম্মেলনের প্রথম বৈঠক বসছে কলকাতায়। আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আজ সোমবার থেকে ১১ তারিখ বুধবার— তিনদিন চলবে বৈঠক। ধারে ও ভারে এমন বৈঠক সাম্প্রতিককালে হয়নি রাজ্যে। ফলে আয়োজন জমকালো করতে কোনও কসুর রাখছে না রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে বৈঠকের উদ্বোধন হবে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে। সেখানে থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা।
আরও পড়ুন-হেরে বার্সেলোনার কাছে পিছিয়ে পড়ল রিয়াল
আজই গণ্যমান্য অতিথিরা পৌঁছেছেন। তাঁদের রাখা হয়েছে শহরের একটি বিলাসবহুল হোটেলে। ১০ ও ১১ তারিখ সম্মেলন হবে জে ডব্লিউ ম্যারিয়টে। তিন দিনের এই বৈঠকে প্রধানত বিশ্বের অর্থনীতি নিয়েই আলোচনা হবে। মূল বিষয় ব্যাঙ্কিং সিস্টেম। এ-দেশে খুব সামান্য অংশেই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হয়। তাই ব্যাঙ্কিং সিস্টেমকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। জি-২০-র সদস্য ১২০ দেশের অর্থসচিবরা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া থাকবেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক, নাবার্ড, আইএমএফ-এর মতো সংস্থার প্রতিনিধিরাও। ৯ তারিখে বৈঠক শেষে ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে গঙ্গাবক্ষে ক্রুজে— ১০ তারিখে নিউ টাউনের পালকুটিরে। এখানেই নৈশভোজের পর থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১১ তারিখে ভিক্টোরিয়া ঘোরানোর সঙ্গে খাওয়ানো হবে স্ট্রিট ফুড।
আসন্ন জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে কলকাতায় আসা বিদেশি অতিথিদের সামনে এ রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হবে। গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের পাশাপাশি নদীর দুই তীরের ইতিহাস জানানো হবে। রায়বেঁশে, ছৌ, কুকরিনৃত্য পরিবেশন করা হবে। এ ছাড়াও থাকছে বিশিষ্ট তবলাবাদক তন্ময় বসুর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঘোরানো হবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। ভিক্টোরিয়ার পাশে থাকবে স্ট্রিট ফুডের প্যাভিলিয়ন। শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্ট্রিট ফুড। তাই অতিথিরা যাতে এই খাবারগুলোর স্বাদ চেখে দেখতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-তলিয়ে যাওয়ার মুখে জোশীমঠ
ভিন দেশের অতিথিদের বরণ করে নিতে শহর জুড়ে চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি। দেওয়ালে পড়ছে রঙের প্রলেপ। বাইপাস ও ধাপা রোড ক্রসিংয়ের কাছে কয়েকটি স্টল রয়েছে। সেইসব স্টল সরিয়ে দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বাইপাস ও ধাপা— এই মধ্যবর্তী অংশে কয়েকটি স্টল রয়েছে। সেইসব স্টল সরিয়ে দেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে এই নিয়ে কথাও শুরু হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের সাহায্য নেবে কলকাতা পুরসভা।
আরও পড়ুন-মেসি মারাদোনার মতোই : সিমিওনে
শহরের একটি দেওয়াল রঙ-তুলির সাহায্যে ছবি এঁকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দেওয়ালে দেখা গিয়েছে সত্যজিৎ রায় ছবির শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত, একটি হলুদ ট্যাক্সি ও এক মহিলা বঁটি দিয়ে মাছ কাটছেন। শহরের কোনও কোনও অঞ্চলের দেওয়ালে রং-তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সন্দুরবনের ম্যানগ্রোভ অঞ্চল, হিমালয়ের টয় ট্রেন, টয় ট্রেনের পিছনে কাঞ্চনজঙ্ঘা। রঙ-তুলি দিয়ে শহর সাজিয়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে।