প্রতিবেদন : ধর্মীয় উস্কানিমূলক নানা মন্তব্যে লাগাতার দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছেন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তাঁর মন্তব্যের জেরে দেশে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বাড়ছে বিদ্বেষ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও সরাসরি তিনি মানুষকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করতে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে হিন্দুত্ববাদী নেত্রীর শাস্তির দাবিতে একযোগে খোলা চিঠি লিখলেন শতাধিক প্রাক্তন আমলা। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে তাঁদের আবেদন এই সাংসদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
আরও পড়ুন-যাত্রীর গায়ে প্রস্রাব নিয়ে মুখ খুললেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান
সম্প্রতি কর্ণাটকে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হিন্দুদের ঘরে ঘরে অস্ত্র রাখার নিদান দিয়েছিলেন প্রজ্ঞা। তাঁর মন্তব্যে দেশজুড়ে শুরু হয় বিতর্ক। এই মন্তব্যের নিন্দা করে একইসঙ্গে প্রজ্ঞার শাস্তির দাবিতে খোলা চিঠি লিখলেন দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জঙ্গ, প্রাক্তন বিদেশ সচিব শিবশঙ্কর মেনন-সহ মোট ১০৩ জন প্রাক্তন আমলা। খোলা চিঠিতে তাঁরা বলছেন, প্রজ্ঞার এই মন্তব্য অহিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। সংসদের মাধ্যমে দেশে আইন প্রণয়ণ করা হয়। সুতরাং, সংসদেরও এবিষয়ে একটা নৈতিক দায়িত্ব থেকে যায়। আইনসভার কোনও সদস্য যদি বারবার এভাবে সংবিধান ভঙ্গ করেন তাহলে সংসদকেই তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
কর্ণাটকে বিধানসভা ভোটের মুখে সাম্প্রদায়িক হাওয়া তুলতে প্রজ্ঞা বলেছিলেন, প্রত্যেকেরই আত্মরক্ষার অধিকার আছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উচিত সবার ঘরে ধারালো অস্ত্র রাখা। নিদেনপক্ষে একটা সবজি কাটার ছুরি যেন থাকে। কেননা কখন কী পরিস্থিতি তৈরি হয় তার ঠিক নেই। অবশ্য প্রজ্ঞার বিতর্কিত মন্তব্য এই প্রথম নয়, কখনও তিনি গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমিক বলেছেন, আবার কখনও জেহাদি দমনে হিন্দুদের ঘরে ঘরে অস্ত্র রাখার নিদান দিয়েছেন। তারপরেও কোনওরকম শাস্তি ছাড়াই দেশের আইনসভার সদস্য হয়ে বসে রয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে প্রাক্তন আমলাদের অনুরোধ, প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। নিদেনপক্ষে বিষয়টি সংসদের এথিক্স কমিটিতে পাঠানো হোক।
আরও পড়ুন-হেরে বার্সেলোনার কাছে পিছিয়ে পড়ল রিয়াল
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন ক্যাবিনেট সচিব রানা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাক্তন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন আমলা কল্যাণী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন আমলা গৌরীশঙ্কর ঘোষ, অবসরপ্রাপ্ত হাইকমিশনার শিবশঙ্কর মুখোপাধ্যায় এবং দেব মুখোপাধ্যায়।