আগরতলা : ত্রিপুরায় ক্রমশ পায়ের তলায় জমি হারাচ্ছে বিজেপি। অন্যদিকে বাংলার পর ত্রিপুরায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই অবস্থায় ত্রিপুরার বিপ্লব দেব সরকার তৃণমূলের অগ্রগতি রুখতে বেআইনি দমনপীড়ন নীতি নিয়েছে। ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনও মিটিং-মিছিল বা সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূলের সভা আটকাতে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা ভণ্ডুল করতে এই ১৪৪ ধারার হাতিয়ারই ব্যবহার করেছে প্রশাসন৷ অথচ আশ্চর্যের বিষয়, ১৪৪ ধারা দেখিয়ে ত্রিপুরায় তৃণমূলের কর্মসূচি বানচাল করা হলেও কয়েকশো মানুষের জমায়েত নিয়ে দিব্যি সভা করছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব ও বিজেপির শরিক দলগুলির নেতারা৷ রাজ্য সরকারের এই দ্বিচারিতার প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব অলোক কুমারকে একটি চিঠি দেয় সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ত্রিপুরা শাখা।
আরও পড়ুন-ভুল চুল কাটার খেসারত ২ কোটি
দলের পক্ষ থেকে তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিক মুখ্যসচিবকে দেওয়া চিঠিতে সমস্ত তথ্য দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন কীভাবে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে। সদর সাব ডিভিশনের অন্তর্গত পূর্ব এবং পশ্চিম ত্রিপুরা থানার সমস্ত এলাকায় পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী এই আইন প্রতিটি নাগরিকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তৃণমূলের অভিযোগ, বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছে যে, জেলাশাসকের ওই নির্দেশ অমান্য করে ইতিমধ্যেই দুটি বড় মাপের অনুষ্ঠান হয়েছে। একটি অনুষ্ঠানের আয়োজক ত্রিপুরা সরকার নিজেই। আয়ুষ্মান ভারত নামে এক সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব-সহ আরও বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সরকারের শীর্ষ আধিকারিক। বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ওই অনুষ্ঠান হয়। দ্বিতীয় অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল বিজেপির শরিক দল রিপাবলিকান পার্টি। ওই দলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালে। আগরতলার মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে আরপিআই তাদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দু’টি অনুষ্ঠানেই ৫০০-র বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ সেখানে কখনওই ১৪৪ ধারার বিধি-নিষেধ মানা হয়নি। তৃণমূলের দাবি, আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ১৮৮ ধারায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে জেলাশাসক কি আদৌ ব্যবস্থা নেবেন?
আরও পড়ুন-ছবি ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা নস্যাৎ
দলের নেতা সুবল ভৌমিক-সহ অন্যরা বিপ্লব দেব সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বিজেপির যদি সৎ সাহস থাকে তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসকেও সভা-সমিতি করতে দেওয়া হোক। উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে। ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকলে ত্রিপুরায় দুর্গাপুজো কীভাবে হবে? বিজেপি সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। এরকম চলতে থাকলে প্রয়োজনে আইন অমান্য করবে তৃণমূল৷ এদিকে এই ঘটনা নিয়ে শুক্রবার আগরতলা পশ্চিম থানায় স্মারকলিপি দেন তৃণমূল নেতা মামুন খান৷