প্রতিবেদন : এবার পথের ধারে খাবার খেয়ে যাবতীয় কুৎসার জবাব দিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়। শনিবার দুপুরে ভিড়ে ঠাসা ডেকার্স লেনে লাঞ্চ সারলেন বীরভূমের সাংসদ। ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ডেকার্স লেনে সুশান্ত দাসের বিখ্যাত দোকানে ভিড়ে ঠাসা রাস্তার ওপর বসে দুপুরের খাওয়ার সঙ্গে চলল জমিয়ে আড্ডা।
আরও পড়ুন-শীতের শহরে সাহিত্যের উষ্ণ ছোঁয়া
খাওয়া শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শতাব্দী বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একশ্রেণির মিডিয়া দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে আমরা খাওয়া-না খাওয়া নিয়ে নিজেদের মতো করে ছবি দেখিয়ে কুৎসা করছে। আমি সাংসদ হিসেবে এত বছর ধরে বীরভূমের মানুষদের সঙ্গে দিনরাত ওঠাবসা করি। সুখ- দুঃখে ওদের পাশে থাকি৷ ওটাই আমার ঘর-বাড়ি। আলাদা করে মিডিয়াকে আমার প্রমাণ করার কিছু নেই। কুণাল ঘোষ বলেন, শতাব্দী তিনবারের সাংসদ। তিনি এতদিন ধরে দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই খেয়ে এসেছেন। বিজেপির মনে রাখা উচিত, শতাব্দী শুধু জনপ্রতিনিধিই নন, তিনি নায়িকা-অভিনেত্রী। বছরের পর বছর ধরে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে তাঁকে শ্যুটিং করতে হয়েছে। তাই এগুলি শুধু সস্তা এবং কুৎসিত, অপপ্রচার। এমনিতেই দুপুরের এই সময়টায় অফিস পাড়ার জমাটি ভিড় থাকে ডেকার্স লেনে। সেই সময় একসঙ্গে শতাব্দী রায় ও কুণাল ঘোষকে রাস্তার ওপর প্লেট হাতে খেতে দেখে পথচলতি মানুষজনও থমকে দাঁড়ায়। শনিবার দুপুরে জেমস হিকি সরণি যা ডেকার্স লেন বলেই পরিচিত তা এই ছবির জন্য প্রস্তুত ছিল না। এদিন শতাব্দী সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি শুক্রবার ওই দলীয় কর্মীর বাড়িতে খেয়েছিলেন। ভাত ডাল, মাছ ভাজা, মাটন— সবই খান। তবে, সেটা ঘরের ভিতরে বসে।
আরও পড়ুন-ফাইনালে ভাঙচুর, মেসিদের বিরুদ্ধে তদন্ত
সেই সময় পাশের ঘরে খাচ্ছিলেন সাংবাদিক-চিত্র সাংবাদিকেরাও। সেই কারণে সেই সময় তাঁরা সাংসদের খাওয়ার ছবি তুলতে পারেননি। পরে ফের ছবি তোলার জন্য সাংবাদিকরা শতাব্দীকে অনুরোধ করলে তিনি ওখানে বসে শুধু ছবি তোলেন। তাঁর কথায়, কাজেই যা দেখানো হয়েছে, আমি খাইনি বলে, তা একেবারেই ঠিক নয়। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের আরও দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত বলে আমি মনে করি। কিন্তু এটা নিয়ে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নামে বিরোধীরা। মিথ্যে খবর খাওয়ানো হয়, যে তিনি দলীয় কর্মীর বাড়িতে খাননি। এর উত্তরে শতাব্দী এদিন বলেন, বীরভূম তাঁর ঘর-বাড়ি। সেখানে তিনি দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই খান। এরপরই শতাব্দীর সহাস্য প্রশ্ন, এতদিন কি আমি না খেয়ে ছিলাম? এরপরেই সাংসদ সংবাদ মাধ্যমকে পাল্টা প্রস্তাব দেন, দিদি-র দূত হিসেবে তিনি গেলে, সাংবাদিকরা যেন একদিন সারাক্ষণ তাঁর সঙ্গে থাকেন। তাহলে তাঁরা বুঝতে পারবেন শতাব্দী কোথায়, কী খান! ক্লাসিক ফাস্ট ফুড সেন্টারের কর্ণধার সুশান্ত দাস বলেন, শতাব্দী রায় আজ এসেছেন। আর কুণাল ঘোষ বহুবছর ধরে এখানে আসেন। উনি আমায় গত বৃহস্পতিবার ফোন করে বলেন শনিবার দুপুরে এখানে লাঞ্চ করবেন শতাব্দী রায় থাকবেন। সেই মতো খাবারের অর্ডারও দিয়ে রেখেছিলেন। দুজনেরই খাবার খুব ভাল লেগেছে এতেই আমি খুশি। এদিন ‘ক্লাসিক ফাস্ট ফুড সেন্টার’-এর সামনে ফুটপাথে একটি চেয়ার নিয়ে বসে বাসন্তী পোলাও, লেমন ফিশ খান দুজনে।
আরও পড়ুন-সাগরসঙ্গমে বিকেলেই ৩৯ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম, উদ্দীপনার ঢেউয়ে শুরু হল মকরস্নান
দিদির দূতরা বিক্ষোভের মুখে পড়ছে বলে যা রটনা হচ্ছে তাও ঠিক নয়, বক্তব্য শতাব্দীর। তাঁর কথায়, বিক্ষোভ মানে কী? যখন বহু মানুষ জড়ো হয়ে কোনও দাবি বা প্রতিবাদ জানান। কিন্তু এক্ষেত্রে সেসব কিছুই হচ্ছে না। শুধু মাত্র, এক-দুজন কিছু না পেলে, সেটা জানাচ্ছেন। আর বেশিরভাগ মানুষই রাজ্য সরকারি পরিষেবায় সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন বলে মত শতাব্দীর। এ ছাড়াও আলাদা করে লোক জড়ো করে তাদের কী বলতে হবে তা শিখিয়ে পড়িয়ে ক্যামেরার সামনে হাজির করছে একশ্রেণির মিডিয়া। এটা ঠিক নয়। এদিন, খাদ্যমন্ত্রীর সামনে তৃণমূল কর্মীর চড় মারার ঘটনা নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, এটা হওয়া উচিত ছিল না। কিন্তু বিজেপি ষড়যন্ত্র করে ওখানে দলীয় নেতা পাঠিয়ে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন রথীন ঘোষ।