প্রতিবেদন : কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই গুজরাত পুলিশ দিল্লির বঙ্গভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ-সহ বাকি সব কিছু তুলে নিয়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকে রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া দিল্লির বঙ্গভবনে অদূর ভবিষ্যতে যাতে বাইরের পুলিশ ঢুকতে না পারে এ-বিষয়ে সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির সভা থেকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে স্পষ্ট নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এভাবে বিনা অনুমতিতে ঢুকলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-ভাঙল বাড়ি
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের কথা উল্লেখ করে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যন্ত শক্তিশালী সাকেত গোখেলকে একাধিকবার গ্রেফতার করেছে গুজরাত পুলিশ৷ মুর্শিদাবাদ জেলার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও আমাদের বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্সের টিম পাঠাচ্ছে। এভাবে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি। এভাবেই নিজের দলের নেতাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নেত্রী।
আরও পড়ুন-গোটা গ্রামই যেন তাঁর পরিবার
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জাকির হোসেন শুধুমাত্র তৃণমূল করেন বলে তাঁর বাড়িতে আয়কর হানা! ১২ জানুয়ারি জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতর। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁর বাড়ি, অফিস, বিড়ি কারখানায় তল্লাশি চালানো হয়। তাঁর বাড়ি থেকে পাওয়া টাকা আয়-বহির্ভূত নয় বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়কের। এদিন কেন্দ্রের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। বলেন, জাকির একজন বিড়ি-শিল্পপতি। তার যে ২০ হাজার বিড়ি শ্রমিক আছে জানো না? কতজন বিড়ি শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে? গ্রামের কতজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে? জাকির তৃণমূল করে বলে এই অবস্থা। বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে। জাকিরকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিল। জাকিরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। দোষ করলে জাকিরকে শাস্তি দাও। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও সুর চড়ান মমতা। বলেন, আমার দুর্ভাগ্য, কোনও একজনকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে।
আরও পড়ুন-হঠাৎ নবান্নে সৌরভ
সাকেত গোখেলের গ্রেফতারি নিয়েও এদিন তীব্র প্রতিবাদ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, বঙ্গভবন থেকে গ্রেফতার করেছে। তার আগে রাজস্থানের এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করেছে। বঙ্গভবন রাজ্যের সম্পত্তি। বিনা অনুমতিতে গেলে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন আইনের পথে চলবে। জিজ্ঞেস করে অনুমতি নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে চাইতে পারো। কিন্তু অনুমতি না দেওয়ার পর বেআইনিভাবে গুজরাট পুলিশ বঙ্গভবনে ঢুকেছে। সব সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গভবনে রাজ্যপাল, বিচারপতিরা গিয়ে থাকেন। সেখানে তাঁরা কার সঙ্গে কথা বলেন, সেসব সিসিটিভি-র ফুটেজ নিয়ে গিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের উপর আঘাত। এইভাবে বিনা অনুমতিতে ঢুকলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ মুখ্যসচিবকে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, গণতন্ত্রে যারা বুলডোজার চালায় তাদের বলি— বুলডোজারের পরিবর্তে বুলডোজার নয়— তাদের ক্লোজার হবে। এরপরেই তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন— দিল্লির লাড্ডুরা, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারদের কি আটকানো যায়? মাঝেমধ্যে খাঁচায় ধরে রেখে ট্রিটমেন্ট করা যায়। কিন্তু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার যদি বিপ্লব করে— সেসব কুৎসা, অপপ্রচার, দাঙ্গার চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দেবে।