সোমবার বইমেলার উদ্বোধন করেই প্রথমে সোনাঝুরির হাট, আর তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য় সেনের (Amartya Sen) প্রতীচীর বাড়িতে চলে গেলেন । আর সেখানে গিয়ে অমর্ত্য সেনের জমির সরকারি নথি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন অর্থনীতিবিদকে অপমান করার বিষয় নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। এছাড়া অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস (Z+) নিরাপত্তার দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর ৬টি নতুন বই প্রকাশ, তোপ দাগলেন বিরোধীদেরও
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বাড়ি গিয়ে তাঁর হাতে নথি তুলে দেওয়ার পাশাপাশি, বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী। জানান তাঁর এবারের সফরসূচি। অমর্ত্য সেনের জন্য রবি ঠাকুরের ছবি, নিজের লেখা বই উপহার স্বরূপ নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। অমর্ত্য দেন ফুলের তোড়া। মমতার কথায়, উনি আমাকে ফুল দিয়ে আশীর্বাদ জানিয়েছেন। প্রতীচী থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অসম্মানের বদলে অমর্ত্য সেনকে সম্মান ফিরিয়ে দিলাম।“ সম্প্রতি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনের জমি দখল করে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বাড়তি জমি দখল করারও হুমকি দেয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কার জবাবে এল আর রেকর্ড নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের হাতে তুলে দেন মমতা। তিনি জানান, একটি চিঠি বিশ্বভারতীয় জয়েন্ট রেজিস্ট্রার অমর্ত্যকে দিয়েছিলেন। তাতে অভিযোগ ছিল, বেশি জমি নিয়েছেন তিনি। অমর্ত্য সেন ১.৩৮ একর জমি নিয়ে আছেন। কিন্তু ওনার জমি ১.২৫ একর। সেখানে জমির সরকারি নথি বলছে, ২৭-১০-১৯৪৩ সালের নথি অনুযায়ী, ১.৩৮ একর জমি বিশ্বভারতী থেকে দেওয়া হয়েছিল অমর্ত্য সেনের বাবাকে। ১৯৮৪ ভূমি-ভূমি সংস্কার দফতরের পক্ষ থেকে নথি অনুযায়ীও সেই জমির পরিমাণ রয়েছে। ১৯৫৬-এর রেকর্ডও তাই বলছে। এই নথিই তুলে দেন মমতা। শুধু তাই নয়, এই নিয়ে আইনত ব্যবস্থাও নেবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, আমি ছোট্ট ছক্কা মেরে গেলাম।
আরও পড়ুন-বীরভূমে আরও ২টি নতুন থানা, মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন মুখ্যমন্ত্রীর
এরপরেই বিশ্বভারতীর উপাচার্যের নাম না করে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, কথায় কথায় ছাত্র-ছত্রীদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে। গৈরিকীকরণের চেষ্টা হচ্ছে। প্রমাণ হয়ে গিয়েছে অমর্ত্য সেন ঠিক কথা বলছে। মমতার কথায়, বিজেপি করলে সাত খুন মাপ! মমতা জানান, বহুদিন বিশ্বভারতীয় পরিচালন সমিতিতে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, এটাকে কেন্দ্রকে দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। যেন সেটা বাংলায় নয়! কেন? এটাই কী কবিগুরু চেয়েছিলেন! মখ্যমন্ত্রী বলেন, একদিন বিবেকের দংশন হবে, অমর্ত্য সেনের কাছে ক্ষমা চাইতেই হবে।
আরও পড়ুন-গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত, কিন্তু বিদ্বেষ ছড়ানো ভাষণ বন্ধ হওয়া উচিত: মুখ্যমন্ত্রী
অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস (Z+) নিরাপত্তার দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তাঁর বাড়ির সামনে ক্যাম্প করতে বলেন তিনি।এর আগে মুখ্যমন্ত্রী সোনাঝুরির হাট ঘুরে দেখেন। কথা বলেন, বিক্রেতাদের সঙ্গে। একটি ব্যাগ-সহ কিছু জিনিস কেনেন মমতা।