প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় বাজেটকে (Union Budget 2023) ‘অমাবস্যার অন্ধকার’ বলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সুরে সমালোচনা বিরোধীদের। লোকসভার তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, দিশাহীন বাজেট। নোটবন্দির পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে গেলেও কালো টাকা উদ্ধার নিয়ে সরকারের কী চিন্তাভাবনা তার দিশা দিতে পারেনি বাজেট। মধ্যবিত্তের জন্য কিছুটা সুযোগ দিলেও শুধুমাত্র ভোটের কথা মাথায় রেখেই তা দেওয়া হয়েছে। আগামী এক বছর মানুষ কী সুবিধা পেতে পারে সেটা না ভেবে ২০৪৭-এর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে! মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোল-ডিজেল সারচার্জ নিয়ে কোনও কথা হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে বয়স্কদের সুবিধা দেওয়া হলেও মনে রাখতে হবে তার আগে পরপর তিন বছর ব্যাঙ্কের সুদের হার কমানো হয়েছে। খোদ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী কেন্দ্রের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, এটা কি বাজেট হয়েছে? এটা আসলে একটা মুদির দোকানের দোকানদারের বিল। একটা ভদ্র বাজেটের উদ্দেশ্য কী তা প্রকাশ করা উচিত। যদি জিডিপি বৃদ্ধি হয় তবে বিনিয়োগের মাত্রা ও রিটার্নের হার প্রকাশ করুন, অগ্রাধিকার দিন অর্থনৈতিক কৌশল এবং সম্পদ সংগ্রহের। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার বলেন, শুধুমাত্র বড়লোকের সুবিধা করে দিতেই এমন বাজেট তৈরি হয়েছে। অথচ বড়লোকদের করের হার কিছুটা বাড়ালে তার সুবিধা ভোগ করতে পারত মধ্যবিত্তরা। সরকার সেই রাস্তায় হাঁটেনি। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, আমি আতঙ্কিত দেশের অর্থব্যবস্থা নিয়ে। ২০২৩-২৪ সালে ৪৫.০৩ ট্রিলিয়ন বাজেট বরাদ্দের মধ্যে মাত্র ১২.৬৮ ট্রিলিয়ন খরচ করা হবে দেশের উন্নয়নে। বাকি টাকা দিয়ে উন্নয়নের কাজ হবে না। সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা বলেছেন, কৃষক, বেকার, দরিদ্র মানুষের কথা ভাবেনি সরকার। ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম যে পরিমাণ নেমে গিয়েছে তা নিয়ে উচ্চবাচ্য নেই। সাংসদ মালা রায় বলেন, বাংলা এবারও বঞ্চিত। অর্থমন্ত্রী এমন কোনও দিশা দেখাতে পারেননি যা থেকে আমরা ভাবতে পারি ভারতের অর্থনীতি আগামিদিনে খুব বড় জায়গায় পৌঁছবে। কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, এই সরকারের লক্ষ্য অস্পষ্ট। ২০১৯-২০ থেকে আয়করের কোনও ডাটা নেই। নতুন কাঠামোয় কতজন কর দিচ্ছে সেকথা কেন জানাচ্ছে না সরকার? দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হচ্ছে। মধ্যবিত্তকে কোনও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্রের যাবতীয় আগ্রহ শুধুমাত্রা ১ শতাংশ মানুষকে নিয়ে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সর্বভারতীয় ফেডারেশন বলেছে, বাজেটে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। নারী বিরোধী, শ্রমিক বিরোধী এই বাজেট। আইসিডিএস কর্মীদের জন্য বাজেটে (Union Budget 2023) কোনও বৃদ্ধি নেই। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কদের পারিশ্রমিকও বাড়ানো হয়নি। গত বাজেটে ২ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি আধুনিকীকরণের কথা ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তার কী হল? দ্বিতীয় মোদি সরকারের পূর্ণ বাজেটে ২৬ লক্ষের বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়ক মিলিয়ে ১ কোটির বেশি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হল।