সুখেন্দুশেখর রায়: আমি অর্থনীতি (Economy of India) নিয়ে শঙ্কিত। ৪৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বাজেট। তার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ উন্নয়ন-বহির্ভূত খাতে। মোটে সাড়ে ১২ লক্ষ কোটি টাকার কিছু বেশি অর্থ (Economy of India) পড়ে থাকবে উন্নয়নমূলক খাতে খরচ করার জন্য। এর মধ্যে মূলধনী খাতে ব্যয়-বরাদ্দ ১০ লক্ষ কোটি টাকা। তাহলে উন্নয়নমূলক খাতে ব্যয়ের জন্য পড়ে থাকে স্রেফ ২ লক্ষ ৬৮ কোটি টাকা। যে-দেশের মোট জাতীয় উৎপাদন ৩০২ লক্ষ কোটিতে পৌঁছবে বলে প্রচার করা হচ্ছে, সে-দেশে উন্নয়নমূলক খাতে ব্যয়-বরাদ্দ মাত্র ২ লক্ষ ৬৮ কোটি টাকা, এটা ভাবা যায়! এতে কি পূর্ণ বিকাশের পথ রুদ্ধ হবে না? মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পাবে না? এটাই আমার শঙ্কার জায়গা। সুদের দায় মেটাতে বাজেটে ১০ লক্ষ ৮০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থায় ব্যয়ের পরিমাণ ৭ লক্ষ ৪৪ কোটি টাকা। পেনশন বাবদ খরচ ২ লক্ষ ৩৪ কোটি টাকা। গত বাজেটের তুলনায় এই তিন খাতে বৃদ্ধির পরিমাণ যথাক্রমে ১৪. ৮৯ শতাংশ, ৭.৫১ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এতটা বৃদ্ধি এর আগে কখনও দেখা যায়নি। বছরের পর বছর এইসব খাতে আয় রাজস্বের তুলনায় ব্যয়ের বহর বেড়েই চলেছে। এ-জন্যই আমি আশঙ্কিত। মোট কর রাজস্বের কেবল ২৩ লক্ষ ৩১ কোটি টাকা রাজ্যগুলোর জন্য বরাদ্দ। বাজেটে কর্পোরেট করের পরিমাণ ৯ লক্ষ ২২ কোটি টাকা। এই পরিমাণ বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ ছিল। ভীতি সঞ্চার করে নয়, যত্ন সহকারে করদাতাদের সঙ্গে ব্যবহার করলে স্রেফ জিএসটি বাবদ আয় কয়েক লক্ষ কোটি বৃদ্ধি করা সম্ভব ছিল। প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহকারী সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বাজেটে ঋণের পরিমাণের সঙ্গে জিডিপি-রও অনুপাত ৫৬ শতাংশ দেখানো হয়েছে। এটা মোটেই আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে না। রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কাম্য মাত্রায় নিয়ে যেতে হলে ভারতীয় করদাতাদের আরও উৎসাহ প্রদান জরুরি ছিল। তাঁদের প্রতি আরও সম্মানপ্রদর্শন আবশ্যক ছিল। অন্যের অর্থ ব্যয় করা খুব সোজা। কিন্তু যাঁরা দেশ গড়ার জন্য অর্থ দিচ্ছেন তাঁরা কি আর একটু মর্যাদা আশা করেন না! এইটুকুই শুধু বলার ছিল।