প্রতিবেদন : সবেমাত্র পুবের আকাশে সূর্যের লাল আভা ফুটতে শুরু করেছে। বেশিরভাগ মানুষ তখনও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তারই মাঝে প্রবল কম্পন। হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে শুরু করল একের পর এক বাড়ি। বেশিরভাগ মানুষই ঘুমন্ত অবস্থায় চাপা পড়লেন ধ্বংসস্তূপের নিচে। প্রবল ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হল দক্ষিণ তুরস্ক ও সিরিয়া।
আরও পড়ুন-এবার রামদেবের সংস্থার শেয়ার দরে বড় পতন
সোমবার ভোরের এই কম্পনে এখনও পর্যন্ত ২৫০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জখম হয়েছেন বেশ কয়েক হাজার মানুষ। প্রশাসনের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। এদিন রিখটার স্কেলে প্রথম কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। কম্পন স্থায়ী হয়েছিল প্রায় ৪৫ সেকেন্ড। পরবর্তী পাঁচ ঘণ্টায় আরও ২২ বার আফটার শক অনুভূত হয়েছে। কম্পনের মিনিট ১৫-র মধ্যেই প্রথম আফটার শক অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬.৭। কম্পনের উৎসস্থল দক্ষিণ তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্বদিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে ভূগর্ভের প্রায় ১৮ কিলোমিটার গভীরে।
আরও পড়ুন-খাদ্যসামগ্রীতে ভরতুকি কমিয়েছে মোদি সরকার
তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়া, মিশর, লেবানন এবং সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। দক্ষিণ তুরস্কের খারামানমারাস প্রদেশে নতুন করে ভূকম্পন হয়েছে। খারামানমারাস প্রদেশের কম্পনে গ্যাসের পাইপলাইনের বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ধরেছে বলে খবর। এখানে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৬। এদিন তুরস্ক ও সিরিয়ার একাংশ কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব। কোনও কোনও পরিবারের প্রায় সব সদস্যদেরই মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারত-সহ একাধিক দেশ তুরস্ক ও সিরিয়াকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করে আহতদের চিকিৎসা চলছে। তুরস্ক বরাবরই ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ১৯৯৯ ও ২০২০ সালেও এই দেশে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল।
আরও পড়ুন-বিরোধিতার স্বার্থেই বিতর্ক, বোঝাল তৃণমূল
সাহায্য করবে ভারত : তুরস্ক ও সিরিয়ার এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে তুরস্ককে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী, উদ্ধারকারী দল ও মেডিক্যাল টিম পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে
ডাচ ভূবিজ্ঞানীর সতর্কবার্তা : তুরস্কে যে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতে চলেছে তিনদিন আগেই সে বিষয়ে তুরস্ক প্রশাসনকে সতর্ক করেছিলেন ডাচ ভূবিজ্ঞানী ও আবহাওয়াবিদ ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস। তিনি জানিয়েছিলেন দক্ষিণ তুরস্কে ৭.৫ মাত্রার কম্পন অনুভূত হতে পারে। হুগারবিটসের সতর্কবার্তা পাওয়ার পর প্রশাসন যদি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কমত।