প্রতিবেদন : ডবল ইঞ্জিন দিল্লি শেষ করেছে, ত্রিপুরাও শেষ করবে! তাই ত্রিপুরায় চাই সিঙ্গল ইঞ্জিন সরকার, বাংলার মতো। বাংলার মডেলেই এখানে উন্নয়ন হবে। ত্রিপুরার মাটিতে দাঁড়িয়েই বিজেপিকে তোপ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন বাম-কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি নেত্রী। আসন্ন ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করতে এসে আগরতলার বুকে কার্যত ঝড় তুলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-আদানি বাঁচাও অভিযান শুরু আরএসএস-এর
নেত্রী বক্তব্য রাখতে ওঠার সময় শঙ্খধ্বনিতে তাঁকে অভ্যর্থনা করেন ত্রিপুরা তৃণমূলের মহিলা সমর্থকরা। তিনিও ধন্যবাদ জানান।
এদিন বক্তব্যের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ডবল ইঞ্জিন বিজেপিকে যেমন একহাত নিয়েছেন, ঠিক একইভাবে বাম-সিপিএম অশুভ আঁতাঁতকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। নেত্রীর কথায়, আমাদের সাংসদ দোলা সেনের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সুস্মিতা দেব, অভিষেকের ওপরও অত্যাচার হয়েছে। ভাগ্যিস সেদিন ওর বুলেট প্রুফ গাড়িটা ছিল, না হলে মরেই যেত। কুণাল ঘোষকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদেরও ছাড়া হয়নি।
আরও পড়ুন-এলআইসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ, আদানি ইস্যুতে প্রতিবাদ তৃণমূল কংগ্রেসের
আগরতলায় ভরা জনসভা থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এখানকার ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকার তৃণমূলের কর্মীদের ওষুধ দিত না, চিকিৎসা দিত না। এসব কথা ভুলব না। ডবল ইঞ্জিন তো দিল্লিও ধুয়ে দিয়েছে, ত্রিপুরাকে কী করে বাঁচাবে? অত্যাচারী সিপিএমের সরকার ছিল এখানে। ভোট থাকলে দেখা পাবেন, ভোট না থাকলে উধাও। বাংলায় রাম-বাম-শ্যাম এক হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লড়ে। ত্রিপুরাতেও জগাই-মাধাই-গদাইরা এক হয়েছে। তাই কংগ্রেস বা সিপিএম নয়। বিজেপির বিকল্প শুধু তৃণমূলই। সিপিএম ২৫ বছরে ত্রিপুরাকে শেষ করে ফেলেছে। আর কংগ্রেস ত্রিপুরায় সিপিএমের বি টিম হিসাবে কাজ করছে। মমতার অভিযোগ, কংগ্রেসে দলবদলু ভর্তি। তাঁরা চার বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য দল বদলান। সিপিএম-কংগ্রেসের এই আঁতাঁত বুঝতে পেরেই আমি তৃণমূল গঠন করেছিলাম। তৃণমূল না গঠন করলে কংগ্রেসকে দিয়ে বাংলায় পরিবর্তন হত না।
আরও পড়ুন-তুরস্ক ও সিরিয়ার কম্পনে মৃত্যু পাঁচ হাজার পেরল
কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে তৃণমূল নেত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে চাকরি পাচ্ছে। আর ওরা ভোটের আগে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে বলেছিল, কেউ পেয়েছেন? বাজেটের আগে সরকারটাই পড়ে যেত। ডবল ইঞ্জিন বেশিদিন থাকলে এলআইসি, ব্যাঙ্কে জমাও টাকাও আর পাবেন না। ওরা আমাদের থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়, কিন্তু ১০০ দিনের কাজে গরিব মা-মানুষের প্রাপ্য আটকে দেয়। তাদের ভোট চাইবার কোনও অধিকার নেই। ওদের দুটি ইঞ্জিন— ইডি আর সিবিআই। যখনই কারও সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে পেরে ওঠে না তখনই তার বাড়িতে ইডি পাঠিয়ে দেয়। ত্রিপুরার ডবল ইঞ্জিন সরকার শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের বেহাল দশা। আমাদের দু-একটা ভুল হয়েছে, যারা করেছে, তাদের আইনি পথে শাস্তি হবে। আর ভোটের দিন ডবল ইঞ্জিন ভয় দেখালে, ওদের ভোট দেবেন বলবেন, আর বুথে গিয়ে চুপ করে জোড়াফুলে ছাপ দেবেন।
আরও পড়ুন-এ মাসেই চলবে নতুন পথে মেট্রো
দলবদলুদের কথা তুলে সতর্ক করে ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে তাঁর আর্জি, আপনারা বাম অপশাসন দেখেছেন, বিজেপি দেখেছেন, কংগ্রেসের সরকারও দেখেছেন। একবার তৃণমূলকে সমর্থন করুন। আমরা বাংলায় পেরেছি, ত্রিপুরায় পারব। আর যদি প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারি তাহলে ফিরিয়ে দেবেন। আমি আগেও ত্রিপুরায় এসেছি। আস্তাবলের মাঠে অনেক সভা করেছি। ভোটের পর আবার আসব। দেখব ডবল ইঞ্জিন, সিঙ্গল ইঞ্জিন নাকি মানুষের ইঞ্জিন সরকার গড়ে এখানে।