প্রতিবেদন : ত্রিপুরায় (TMC- Tripura) প্রচারে ঝড় তুলে একের পর এক প্রশ্নে বিরোধীদের বিদ্ধ করল তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে বিজেপিকে প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বদল করতে হল কেন বিজেপি জবাব দিক। ক্ষমতা থাকলে প্রকাশ্যে জানাক। কোন অপদার্থতার কারণে মুখ বদল? শুধু বিজেপি কেন, কংগ্রেসের দোসর এখন সিপিএম। তাদের প্রশ্ন, ২৫ বছরের মুখ্যমন্ত্রী কেন ভোটে দাঁড়ালেন না? কোন ভয়ে তাঁকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পাঠানো হল না? তৃণমূলের স্পষ্ট কথা, উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ক্ষমতায় এলে প্রতিমাসে তৃণমূলনেত্রী ত্রিপুরায় আসবেন। বৈঠক করবেন। বাংলার প্রকল্পগুলি দ্রুত রূপায়ণ করবেন। রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংবাদিক সম্মেলনে কুণাল ঘোষ, সুস্মিতা দেব, শিবু চৌধুরী, শান্তনু সাহা, সুপ্রিয় চন্দরা একের পর এক প্রশ্ন তুলেছেন, তোপ দেগেছেন। যার উত্তর দিতে পারেনি বিজেপি।
কেন মোদি – শাহকে আসতে হচ্ছে : ৬০ আসনের বিধানসভা নির্বাচন। শাসক দল বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার। কোথায় আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থকার কথা। কোথায় সেসব! আত্মবিশ্বাস – দলের জনপ্রিয়তা এতটাই তলানিতে যে মেক- আপ করতে মোদী- শাহর মতো শীর্ষ নেতৃত্বকে বার বার প্রচারে আসতে হচ্ছে। এসব দেখে ২০২১ এ বাংলার নির্বাচনের কথা মনে পড়ছে বললেন, কুণাল ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ বদল : ২০২২ এ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে সরিয়ে মানিক সাহাকে মুখ করেছে বিজেপি। কিন্তু কেন এই মুখ বদল? কুণাল ঘোষের কথায়, আসলে গত পাঁচ বছরে বিজেপি ত্রিপুরাবাসীর জন্য কোনো কাজ করেনি। মুখ্যমন্ত্রীও কিছুই করেননি। মানুষের ক্ষোভ থেকে বাঁচতে তাই মুখ বদলে সামাল দেওয়ার চেষ্টা। এতে আদৌ কোনো লাভ হবে না।
বাংলার মডেল নকল : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় যে উন্নয়নের মডেল তৈরি করেছেন, গোটা দেশে তা স্বীকৃতি ও সেরার শিরোপা পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক বিভাগে প্রথম পুরস্কার দিয়েছে। সেই মডেলই নকল করছে বিজেপি দেশে ও ত্রিপুরায়। অথচ বাংলার টাকা আটকে রেখেছে নোংরা রাজনীতিতে৷ এমনকি গুজরাতেও বাংলার দুয়ারে সরকারের আদলে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
ভূমিপুত্ররাই ত্রিপুরা চালাবে : তৃণমূল জিতলে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হবেন কোনো ভূমিপুত্রই। তারাই সরকার চালাবেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি মাসে একবার অন্ততঃ ত্রিপুরায় এসে সচিবালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সকলকে গাইড করবেন৷ বাংলার উন্নয়ন প্রকল্পগুলি ত্রিপুরার মতো করে করতে সাহায্য করবেন।
আরও পড়ুন-৪৬তম বইমেলায় রেকর্ড বই বিক্রি, লোকসংখ্যা ২৫ লক্ষ পার, অভিনব ভাবনার পুরস্কার জাগো বাংলার
ডাবল ইঞ্জিন মানে বাংলা-ত্রিপুরা : গত পাঁচ বছর বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার থেকেও ত্রিপুরাবাসীর কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাই এবার আর বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার চায় না এখানকার মানুষ। যদি ডাবল ইঞ্জিন সরকার গড়াতেই তবে তা হোক বাংলা – ত্রিপুরার ডাবল ইঞ্জিন সরকার। সাফ কথা কুণাল ঘোষের।
বিজেপির ঘাটতি পূরণে কমিশন : অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে নুয়মাবলি ও আরও অন্যন্য বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশন যতটা কড়া মনোভাব ও নিয়ম- কানুন প্রয়োগ করে ত্রিপুরা সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ঠিক তার উল্টোটা করে। বিজেপির ক্ষেত্রে সবটাই শিথিল। আসলে কমিশন ত্রিপুরায় বিজেপির ঘাটতি পূরণে কাজ করছে। অথচ এখানে বিরোধীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
জেরক্স নয় অরজিনাল নিন : ত্রিপুরা (TMC- Tripura) চালাচ্ছে দিল্লি ও গুয়াহাটি। এখানকার বিজেপি নেতৃত্বের কোনো ক্ষমতাই নেই কোনো স্বাধীম সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সবই জেরক্স কপি করে চালানো হচ্ছে। তাই আর জেরক্স সরকার নয়,অরজিনাল সরকার চায় ত্রিপুরার মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যে সরকারকে অভিভাবকের মতো গাইড করবেন।
কংগ্রেসের রাজ্যে তৃণমূল যায়নি : ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে বলেই বিজেপি সরকার তৈরি করতে পেরেছে দেশে। তৃণমূল কংগ্রেস তো আর কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে যায়নি। বরং বিজেপি শাসিত রাজ্যে গিয়ে বিজেপিকেই চ্যালেঞ্জ করেছে। বাংলায় বিজেপিকে একাই রুখে দিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস লাগাতার ব্যর্থ হতে হতে বাংলায় এখন মহাশূন্যে পরিণত হয়েছে। সিপিএমের অবস্থাও একই। শূন্য। ত্রিপুরায় মানিক সরকার এবার সরে দাঁড়িয়েছেন। কারন, তিনিও বুঝেছেন এই সিপিএম কিছুই করতে পারবে না। সিপএম – কংগ্রেস এখানে কুস্তির ভাব দেখাচ্ছে, অথচ বাংলায় দোস্তি। আসলে বিজেপির দালালি করছে। তীব্র কটাক্ষ কুণাল ঘোষের।