প্রতিবেদন : ত্রিপুরায় বিজেপি (Tripura- BJP) সরকার যদি এত ভাল কাজই করবে তাহলে তাদের মাঝপথে মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হল কেন? জনরোষের হাত থেকে বাঁচতেই মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে মুখ বাঁচানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। বিধানসভা ভোটের শেষলগ্নে ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির অপশাসন ও বাম-কংগ্রেসের দেউলিয়া রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিকল্পের ডাক দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। রবিবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলায় দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ত্রিপুরায় বিজেপির ডবল ইঞ্জিনের নমুনা দেখেছেন মানুষ। বিজেপি ত্রিপুরায় এমন কাজ করেছে যে মাঝপথে তাদের বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হয়েছে! এরপরেও অবস্থার বদল হয়নি। তৃণমূল মুখপাত্র বার্তা দেন, আগে মুখ্যমন্ত্রী বদল, এবার সরকারের পালাবদল।
এর পাশাপাশি বিজেপি (Tripura- BJP) ও বামেদের সম্পর্ক নিয়ে কটাক্ষ করেন কুণাল। বলেন, বাংলায় দোস্তি আর ত্রিপুরায় কুস্তি। বাংলায় তৃণমূলকে হারাতে হাত মিলিয়ে লড়েছে বাম আর বিজেপি। বাংলায় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সমবায় দখল—সব ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করছে বামেরা। আর এখানে তার দেখাচ্ছে তারা বিপক্ষ। সিপিএমের এই ভ্রান্ত নীতির জন্যই বাংলায় তারা শূন্য। একইভাবে হারিয়ে গিয়েছে কংগ্রেসও। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সম্পর্কে সম্মান জানিয়েই কুণাল বলেন, মানিকবাবু নিজে নির্বাচনে লড়বেন না, কারণ দলের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নন তিনি। বাংলায় বাম জমানার অপশাসনের অভিযোগ তোলেন কুণাল। তাঁর মতে, বাম জমানায় বাংলায় শিক্ষার মান নেমে গিয়েছিল। গোটা একটা প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তৃণমূল সরকারের আমলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন-সুকান্ত মেনে নিলেন পঞ্চায়েতে সব কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে না
তৃণমূল মুখপাত্র জানান, কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে যাননি তাঁরা। তাও হালে পানি পাচ্ছে না কংগ্রেস। বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস মহাশূন্য। বাম-কংগ্রেস অশুভ শক্তির জোট করেছে বলে মন্তব্য তৃণমূল নেতার।
এরপরেই বাংলার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের খতিয়ান দেন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেন, উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দেশের মধ্যে সেরা বাংলা। তৃণমূল সরকারের দুয়ারে সরকার প্রকল্প দেশের মধ্যে সেরার শিরোপা পেয়েছে। আর নারী নির্যাতনে দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে উত্তরপ্রদেশ-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। বিজেপি শাসিত গুজরাত দুয়ারে সরকারের নকল করছে। দেশের মধ্যে কর্মসংস্থানেও এগিয়ে বাংলা। পর্যটন ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। ছবির মতো সুন্দর ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরা। এখানেও পর্যটনের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিজেপি দুর্নীতি করে কোনও উন্নয়ন করেনি। ক্ষমতায় এলে ত্রিপুরার পর্যটনক্ষেত্র ঢেলে সাজাবে— প্রতিশ্রুতি তৃণমূলের। তৃণমূলের অভিযোগ, বাম আমলের দুর্নীতির ফলে ত্রিপুরায় ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষক কাজ হারিয়ে রাস্তায় বসেছেন। আর এরা বাংলার দুর্নীতির কথা বলে! সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কুণাল ঘোষ বলেন, বাংলায় আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা বুঝে গিয়েছেন বামেদের মামলার ফলেই তাঁদের কাজ পেতে দেরি হচ্ছে। বাংলার বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করে কুণাল বলেন, সারদার এফআইআর নেমড শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতারি এড়াতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, আর এখন নিজে দুর্নীতির কথা বলছেন! এটা হাস্যকর।