নয়াদিল্লি : মোদি ঘনিষ্ঠ আদানি গোষ্ঠীর বিপুল আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে সংসদে আলোচনা এড়াতে চায় কেন্দ্র। সোমবার রাজ্যসভায় বিরোধীরা আদানি ইস্যুতে (Adani Issue- Rajya Sabha) একযোগে আলোচনার দাবি তুলতেই অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হল। চেয়ারম্যানের এই পক্ষপাতদুষ্ট একতরফা আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। সোমবার আদানি ইস্যুতে রাজ্যসভায় আলোচনার দাবির পাশাপাশি কংগ্রেস সাংসদ রজনী পাতিলের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে এদিনই সভা মুলতুবির ঘোষণা করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় (Chairman Jagdeep Dhankhar)। বিরোধীদের লাগাতার স্লোগান এবং বিক্ষোভের মধ্যে ১৩ মার্চ পর্যন্ত সভা মুলতুবি করে দেন তিনি। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, আলোচনা থেকে পালিয়ে যেতেই সভা মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে। যদিও সভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ার দায় বিরোধীদের ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছে ট্রেজারি বেঞ্চ।
সোমবার সভা শুরু হতেই রাজ্যসভায় (Adani Issue- Rajya Sabha) প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধী দলের সাংসদরা। তাঁদের দাবি, আদানি ইস্যু নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই। একইসঙ্গে এই আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করতে হবে। আদানিদের জালিয়াতির জেরে আমজনতার সঞ্চয় অসুরক্ষিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এছাড়া বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের বক্তব্যের অংশ মুছে দেওয়ারও প্রতিবাদ জানান বিরোধী সাংসদরা। ওয়েলে নেমে স্লোগান দিতে থাকে বিরোধী দলগুলি। শুরুতেই খাড়গের সঙ্গে বাদানুবাদও হয় চেয়ারম্যানের। মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ বিরোধী সাংসদদের অভিযোগ, সরকারের চাপেই পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন চেয়ারম্যান। বিরোধী দলনেতাকে চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় হুমকি দেন, আপনি বলেছেন চেয়ারম্যান সরকারের চাপে পড়ে কাজ করছে। এই কথাগুলি মুছে ফেলা হচ্ছে। আপনি সংসদে আপনার সীমা লঙ্ঘন করছেন। বিরোধীদের দাবি, আলোচনা থেকে পালিয়ে যেতে তড়িঘড়ি সভা মুলতুবি করে দিয়েছে সরকার। তৃণমূলের অভিযোগ, যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক থেকেই থেকে পালিয়ে যেতে চায় মোদি সরকার। রাজ্যসভা মুলতুবি হয়ে যাওয়া নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন বলেন, সরকার বুঝতে পারছে যে, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেগুলি অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। সেই কারণেই দ্রুত আলোচনা থেকে পালিয়ে যেতে সভা মুলতুবি করে দিয়েছে কেন্দ্র। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শক্তিসিং গোহিল বলেন, আমদের দাবি, আদানি ইস্যুতে সংসদে আলোচনা হোক। যদিও সরকার আলোচনা চায় না। আদানি ইস্যুটিকে তুলে ধরার জন্যে আমাদের কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। সংসদের বাইরে এই ইস্যুতে প্রতিবাদ জারি থাকবে বলে বুঝিয়ে দেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন-২০২২-এ মুখ্যমন্ত্রী বদল, ২০২৩-এ সরকার বদল, অভিষেক ঝড়