মণীশ কীর্তনীয়া: এ ঘটনা বিরলই বটে। এর আগে কখনও কোনও মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঘটেনি। যা আজ ঘটল। যে কোনও বাজেট পেশের আগে মানুষ আশা করেন তাঁদের নিত্য কঠিন জীবনে নতুন কোনও আশার খবর পাওয়া যাবে কি না। কেন্দ্রীয় বাজেটে সেরককম কিছু পাওয়া যায়নি সংখ্যার জাগলারি ছাড়া। রাজ্য বাজেট নিয়ে তাই মানুষ চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) দিকে। তিনি নিরাশ করেননি। তবে তার শুরুটা মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন এই বাজেট হতে যাচ্ছে আমজনতার কল্যাণের বাজেট (West Bengal Budget 2023)। উন্নয়নের বাজেট। তাই মন্ত্রিসভার বৈঠকেই বুধবার একটি অন্য পরিবেশ তৈরি হল। কয়েকজন মন্ত্রী পেলেন উপহার। আসলে ঠিক কী হল মন্ত্রিসভার বৈঠকে? হঠাৎ উপহারই-বা কেন? রাজ্য বাজেট পেশের আগে নিয়মমাফিক মন্ত্রিসভার বৈঠক হয় বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) ঘরে। আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজেট পাশ হল মন্ত্রিসভায়। কিন্তু বৈঠক শেষে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যকে দেখা গেল কেউ সরষের তেলের বোতল, কেউ চাদর, কেউ-বা ব্যাগ আবার কেউ গামছা হাতে নিয়ে বেরোচ্ছেন। ব্যাপার কী? খোঁজ নিয়ে জানা গেল কারামন্ত্রী অখিল গিরি প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের বন্দিদের তৈরি কয়েকটি জিনিস মুখ্যমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসবে নিয়ে এসেছিলেন। সেগুলিই মুখ্যমন্ত্রী বিলিয়ে দেন মন্ত্রী শশী পাঁজা, বীরবাহা হাঁসদা, শিউলি সাহা এবং অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে (Chandrima Bhattacharya)। শশী পাঁজা (Shashi Panja) পেয়েছেন এক লিটার খাঁটি সরষের তেল। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পেয়েছেন একটি চাদর। শিউলি সাহাকে দেওয়া হয়েছে একটি ব্যাগ এবং জঙ্গলকন্যা বীরবাহা হাঁসদা পেয়েছেন একটি গামছা। নিজের জন্য কিছুই রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাই তাঁর রেওয়াজ। বহু মানুষ সহকর্মী পরিচিত অপরিচিত সকলেই বিভিন্ন সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নানা উপহার নিয়ে আসেন। তা সে মিষ্টি হোক কিংবা অন্য কোনও দামি উপহার— নিজের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুই রাখেন না। আশপাশে উপস্থিত লোকজনকে বিলিয়ে দেন। কখনও কোনও স্মারক পছন্দ হলে সেটা কোনও প্রতিষ্ঠানে রাখার কথা বলেন। জেলায় কখনও কোনও উপহার পেলে মনের মণিকোঠায় রাখেন। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রীতি। বিলিয়ে দিয়েই তিনি খুশি। বুধবার রাজ্য বাজেটের দিনও সেই নজির বজায় রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।