প্রতিবেদন : গত বছরের ৩০ অক্টোবর ভেঙে পড়েছিল গুজরাতের মোরবি সেতু। ভয়ঙ্কর সেই বিপর্যয়ে ১৩৫ জন প্রাণ হারান। আহতের সংখ্যা বহু। শুরু থেকেই এত বড় বিপর্যয়ের দায় ঝেড়ে ফেলতে চেষ্টা করেছিল মোদিরাজ্যের সরকার। কিন্তু এবার সেতু ভাঙার তদন্তেই উঠে এল সরকারি স্তরে নজরদারির পাহাড়প্রমাণ গাফিলতি। বিজেপি সরকারের গড়া বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের রিপোর্টই বলছে, বিপর্যয়ের আগেই মোরবি সেতু অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল।
আরও পড়ুন-গৌতম আদানির সম্পদ নামল ৫০ বিলিয়ন ডলারের নিচে
সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় গুজরাত সরকার ৫ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে। ওই কমিটি তার রিপোর্টে সেতু বিপর্যয়ের জন্য মূলত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ওরেভাকেই দায়ী করেছে। মোরবি সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় সরকারিভাবে ১৩৫ জনের মৃত্যুর কথা বলেছিল গুজরাত সরকার। যদিও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।
আরও পড়ুন-অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের সুযোগসুবিধা দেওয়া বন্ধ হোক, মত সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির
ইতিমধ্যে সিট সেতু বিপর্যয়ের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট তুলে দিয়েছে মোরবি পুরসভার হাতে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অত্যন্ত নিম্নমানের জিনিস দিয়ে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেছিল ঠিকাদারি সংস্থা। সেতুর লোকধারণ ক্ষমতা কত সে সম্পর্কে কোনও ধ্যান-ধারণাই ছিল না তাদের। ফিট সার্টিফিকেট নেওয়ার আগেই সেতু খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেতুর দু’টি প্রধান তারের মধ্যে একটি ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায়। যেকোনও সময় তা থেকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। রক্ষণাবেক্ষণের সময় মরচে ধরা তারগুলিও বদল করা হয়নি। বরং সেই তারের উপর রং করে চকচকে করার চেষ্টা হয়েছিল। সেতুর ৪৯টি তার বা কেবলের মধ্যে ২২টি অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবে ক্ষয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন-মনরেগায় বরাদ্দ কম, ব্লকস্তরে আন্দোলন
দুর্ঘটনার দিন ২৭টি তার ছিঁড়ে পড়ে। ক্ষয়ে যাওয়া তার পাল্টে দেওয়া হলে এ ধরনের বিপর্যয় এড়ানো যেতে বলে কমিটি সাফ জানিয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি স্তরে নজরদারি ছিল না বলে মেনে নিয়েছে সিট। সেতুটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার আগে ওরেভা সংস্থা সরকারের অনুমোদন নেয়নি। প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো এই সেতুটি সাত মাস ধরে সংস্কার করা হয়েছিল। সেতুটি খুলে দেওয়ার তিনদিনের মধ্যে এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘটে। বহু টালবাহানার পর গুজরাত পুলিশ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ওরেভা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জয়সুখ প্যাটেল-সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে।