সংবাদদাতা, হাওড়া : অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সচেতনতার ওপরেই বেশি জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। অযথা এই নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতোই চলতে বলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত জল, ওআরএস খাওয়ার পাশাপাশি বিশ্রাম নিতে বলা হচ্ছে জ্বর, সর্দি, কাশিত আক্রান্ত ব্যক্তিদের। চিকিৎসকরা বলছেন অ্যাডিনো ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা এমনিতে কমই। ৪-৫ দিন বিশ্রাম নিলে অধিকাংশ ব্যক্তিই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিশু ও বয়স্কদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক অবস্থা জটিল হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন-নিখাদ প্রেমের গল্প বলবে একলা ঘর
এই প্রসঙ্গে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাণা চট্টোপাধ্যায় বলেন, অ্যাডিনো ভাইরাস মূলত ড্রপলেট থেকে ছড়ায়। তাই এই অবস্থায় শিশু ও বয়স্কদের খুবই সাবধানে থাকতে হবে। শপিং মল, চিকিৎসাকেন্দ্র, হাসপাতালে গেলে অবশ্যই সার্জিক্যাল মাস্ক পড়তে হবে। ভিড় এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়া যাবে না। চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। জ্বর হলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনও ওষুধ চিকিৎসকের নির্দেশ ছাড়া খাওয়া চলবে না। বেশি করে জল খেতে হবে। সুষম ও সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। তিনি বলেন, এই রোগের কোনও ভ্যাকসিন নেই। নির্দিষ্ট কোনও ওষুধও নেই। অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপ রুখতে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং সতর্কতার ওপরেই বিশেষ জোর দিতে হবে। চলতি বছরে জানুয়ারি মাস থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ১৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৬১ জনের অ্যাডিনো ভাইরাস পাওয়া গেছে। ২ জনের শরীরে ইনফ্লুয়েনজা ও একজনের শরীরে রাইনো ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন-রাস্তাশ্রী নিয়ে আজ জরুরি বৈঠক নবান্নে
চিকিৎসকরা বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের এই সময় প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় এই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত ফি বছরই দেখা যায়। অধিকাংশের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্তকরণের আগেই তাঁরা সুস্থ হয়ে যান। এবছর তেমনটাই হচ্ছে। চিকিৎসকদের কথায়, ‘সারাদিন যত রোগী দেখছি তার ৫০ শতাংশই জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে আসছেন। তবে এবার লক্ষণের কিছুটা রূপ বদলেছে। অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত অনেকের প্রচন্ড মাথার যন্ত্রণা হচ্ছে, কারও চোখের সংক্রমণ বা কনজাংটিভাইটিস হচ্ছে। আবার অনেকের ডায়েরিয়া হতেও দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগই ৪-৫ দিনে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। গরম বাড়লেই এই ভাইরাসের প্রকোপ নিজে থেকেই কমে যাবে।’ এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।