প্রতিবেদন : কাশ্মীরে জনজীবন স্বাভাবিক হবে। সাধারণ মানুষের জীবন সুরক্ষিত ও নিরাপদ হবে, এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার (Narendra Modi Government)। কিন্তু ভূস্বর্গের বাস্তব পরিস্থিতি ঠিক উল্টো কথা বলছে। অভিজ্ঞতা বলছে, বিজেপি সরকারের এই নীতি সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে প্রমাণ হয়েছে। ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পরেও কাশ্মীরে জঙ্গিদের হাতে নিয়মিত প্রাণ গিয়েছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে কাশ্মীরে পণ্ডিতদের (Kashmiri Pandit) নিশানা করেছে জঙ্গিরা। গত রবিবার পুলওয়ামায় জঙ্গিরা সঞ্জয় শর্মা নামে কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের একজনকে গুলি করে খুন করে। এই ঘটনার পরই এলাকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। এই তল্লাশি অভিযানে মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনী এক জঙ্গিকে খতম করেছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল অধিবেশন বন্ধ রাখতে পারেন না : সুপ্রিম কোর্ট
মঙ্গলবার বিশেষ সূত্রে কাশ্মীরের অবন্তিপোরায় জঙ্গিদের একটি গোপন ঘাঁটির সন্ধান পাওয়া যায়। ওই খবরের ভিত্তিতে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান শুরু করে সেনা, আধাসেনা ও কাশ্মীর পুলিশের যৌথবাহিনী। নিরপত্তা বাহিনীর উপস্থিতির টের পেয়েই গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাব দেয় জওয়ানরা। গুলি লড়াই থামতে তল্লাশি চালিয়ে এক জঙ্গির দেহ উদ্ধার হয়। অন্য জঙ্গিরা পালিয়ে গেলেও তাদের খোঁজে ফের তল্লাশি শুরু হয়েছে। মৃত জঙ্গি সঞ্জয় শর্মাকে খুন করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, মোদি সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর ভূস্বর্গে জঙ্গিদের নিশানায় রয়েছে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা (Kashmiri Pandit)। যে কারণে বেশিরভাগ পণ্ডিত পরিবারই কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এরই মধ্যে সঞ্জয় শর্মার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে আরও একবার সামনে এল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি। সঞ্জয়ের কফিন কাঁধে বয়ে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে চিতার কাঠ সংগ্রহ করা, সব কিছুই করলেন তাঁর মুসলিম প্রতিবেশীরা। পুলওয়ামা জেলার আচান গ্রামে সঞ্জয় ছিলেন একমাত্র পণ্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষ। সঞ্জয়ের প্রতিবেশী মুদাসির আহমেদ জানিয়েছেন, তাঁরা কখনও সঞ্জয়কে আলাদা করে দেখেননি। সঞ্জয়ের মৃত্যু তাঁদের কাছে বড় আঘাত। তাঁরা সবাই মিলেমিশে একসঙ্গে বাস করছেন। কখনও কারও সঙ্গে কোনওরকম অশান্তি হয়নি। সঞ্জয়ের শেষকৃত্যের যাবতীয় কাজ তাঁরাই করেছেন।