প্রতিবেদন : সরাসরি আদানিগোষ্ঠীর নাম না করেও কার্যত এই ব্যবসায়িক সংস্থার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠতার দিকে আঙুল তুললেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ড. রঘুরাম রাজন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নামজাদা এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কোনও একটি বিশেষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী বা পরিবারের সঙ্গে নীতি প্রণেতাদের ঘনিষ্ঠতা কখনও দেশের জন্য ভাল হয় না।
আরও পড়ুন-শুটিং ফ্লোরে চোট পেয়ে মাঝপথে মুম্বই ফিরলেন বিগ বি
সরকারের উচিত, বিভিন্ন সংস্থাকে তাদের নিজেদের দক্ষতা অনুসারে বৃদ্ধির সুযোগ করে দেওয়া। কোন শিল্পগোষ্ঠী সরকারের কত ঘনিষ্ঠ সেই যোগাযোগের ভিত্তি সুযোগসুবিধা পাওয়ার মাপকাঠি হতে পারে না। দক্ষতাই একমাত্র বিচার্য বিষয় হওয়া উচিত। রাজনৈতিক মহলের মতে, মোদি জমানায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রিয়পাত্র গৌতম আদানির হাতে যেভাবে ভারতের বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, জাতীয় সড়কের মতো দেশের সম্পদ তুলে দেওয়া হয়েছে এবং এলআইসি, এসবিআইয়ের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে আদানিদের সংস্থায় বিনিয়োগে বাধ্য করা হয়েছে সেই বিপজ্জনক প্রবণতার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন ড. রঘুরাম রাজন।
আরও পড়ুন-বঞ্চনার শেষ দেখব, গর্জে উঠলেন শ্রমিকেরা
এর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও সঠিকভাবে নিজের ভূমিকা পালন করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। মার্কিন রিসার্চ সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই আদানি গোষ্ঠীর কয়েক দশক ধরে চলা শেয়ার জালিয়াতি নিয়ে শোরগোল পড়েছে দেশে-বিদেশে। এই ঘটনার জেরে আদানি গোষ্ঠীর প্রতিটি সংস্থার শেয়ারের দর ধারাবাহিকভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে। হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠী বিদেশে বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থা খুলে তার মাধ্যমে টাকা ঢেলে নিজেদের সংস্থার শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে। রাজন বলেছেন, মরিশাসের যে সমস্ত সংস্থার বিরুদ্ধে আদানিদের শেয়ার ধরে রাখা এবং লেনদেন করার অভিযোগ উঠেছে তাদের মালিকানা কার, আাদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের কী সম্পর্ক তা খুঁজে বের করা দরকার। এই কাজ করা উচিত ছিল বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির। কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব পালন করেনি। তাহলে তাদের কি কোনও তদন্তকারী সংস্থার সাহায্যের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে?
আরও পড়ুন-শরণার্থী সমস্যা মেটাতে নতুন আইন আনছে ব্রিটেন
একইসঙ্গে রাজন বলেছেন, দেশের সমস্ত বেসরকারি সংস্থা এবং পরিবার পরিচালিত সংস্থাগুলিকেও সরকারের উৎসাহ দেওয়া উচিত। সরকারের উচিত, তাদের সকলের সামনে সমান সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। কোনও একটি সংস্থার হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হওয়া কখনওই কাম্য নয়।
এদিকে এরই মধ্যে জানা গিয়েছে, প্রবল ঋণের ফাঁদে হাঁসফাঁস করছে আদানি গোষ্ঠী। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের মধ্যে তাদের প্রায় ১৬,৫০০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে সোমবার আদানিদের অন্তত ১০টি সংস্থার শেয়ারের দর বেশ কিছুটা বেড়েছে বলে খবর।