প্রতিবেদন : ঋণের বোঝায় দিশেহারা অবস্থা নরেন্দ্র মোদি সরকারের। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও ঋণের পথেই হাঁটছে মোদি সরকার। বুধবার অর্থমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অর্থবর্ষের শুরুতেই সরকার বাজার থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নেবে। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে ১৫.৪৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিতে চলেছে কেন্দ্র। যার মধ্যে আর্থিক বছরে শুরুতেই মোদি সরকার বাজার থেকে ৮.৮ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেবে।
আরও পড়ুন-সাংসদ-বিধায়কদের ক্ষেত্রে রায়দানে আরও সতর্ক থাকুন
অর্থমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি ঘটাতে এবং রাজস্ব ব্যবধান মেটাতে এই ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা। ঋণের অঙ্ক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, ২০১৯ সালের তুলনায় এবার দ্বিগুণ পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে মোদি সরকার। এই ঘটনাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, মোদি সরকারের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই বিপুল পরিমাণ ধারের ফলে প্রাইভেট সেক্টরের ঋণের দর বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আদানি-আম্বানিদের ঋণ পেতে অসুবিধা না হলেও সমস্যায় পড়বেন ছোট ব্যবসায়ীরা। এতে ভারতের সামগ্রিক বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়বে। আইএমএফ থেকে ভারত প্রতিবছর তার জিডিপির ১৫ শতাংশ ধার করে। অর্থনীতিবিদদের অনুমান, এর ফলে লোন ক্রাইসিসের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের ধার কমাতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপ বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে বিভিন্ন জনস্বার্থমূলক প্রকল্পে।
আরও পড়ুন-২৪ ঘণ্টার জন্য লাগবে না সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ভুটানে মিলবে ছাড়
২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ঘোষণা করেছিলেন, সরকার ১৫.৪৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেবে। যার মধ্যে ৮.৮ লক্ষ কোটি টাকা অর্থাৎ ৫৭.৫ শতাংশ টাকা ঋণ নেওয়া হবে অর্থবর্ষের প্রথম ছয় মাসে। বাজার থেকে বন্ডের মাধ্যমে এই টাকা তোলা হবে। ২৬ সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে এই ঋণ নেবে অর্থমন্ত্রক। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের প্রতি শুক্রবার ৩১ হাজার থেকে ৩৯ হাজার কোটি টাকা আসবে কেন্দ্রের কোষাগারে। অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, ৩, ৫, ৭, ১০, ১৪, ৩০ এবং ৪০ বছরের সিকিউরিটিজের মাধ্যমে দফায় দফায় এই বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট ভাষণে জানিয়েছিলেন চলতি অর্থবর্ষে ঘাটতির পরিমাণ ৬.৪ শতাংশ। কিন্তু ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে সরকার ঘাটতির পরিমাণ ৫.৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায়। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের অনুমান, আগামী দশকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ হবে।