প্রতিবেদন : সর্বভারতীয় রাজনীতিতে ফের তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বললেন, তৃণমূল কংগ্রেস কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু কংগ্রেসকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলায় বিজেপি-সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের বিরোধিতা করবে আর দিল্লিতে জোট চাইবে এটা হয় না। আবার বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে গলাগলি করে কেরলে সিপিএমের বিরুদ্ধাচারণ করবে, এটাও হয় না। দ্বিচারিতা বন্ধ করতে হবে কংগ্রেসকে। স্পষ্টভাবে নীতিগত অবস্থান জানাতে হবে। আগামী নির্বাচনে যে রাজনৈতিক দল যে রাজ্যে শক্তিশালী তারাই প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে সেখানে মুখ্য ভূমিকা নেবে। শক্তিশালী বিরোধী জোট গড়তে সব দলকে অহং ছেড়ে বেরোতে হবে। আদর্শগতভাবে একজোট হতে হবে। বিজেপি যে সকলের প্রধান শত্রু তা বুঝতে হবে। আগামী লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস অসম, গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরায় লড়াই করবে। তবে জোটের সিদ্ধান্ত অভিষেক মানুষের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-গ্রেফতার ট্রাম্প
রাহুল গান্ধী প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, এটা ব্যক্তিকে সমর্থন নয়। রাহুল গান্ধীর জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও তৃণমূলের একই অবস্থান থাকত। কেন্দ্র যেভাবে বুলেট ট্রেনের গতিতে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করেছে এবং তারপর দিনই রাহুল গান্ধীকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে, আমরা তার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন-কেরলকাণ্ডে অভিযুক্ত গ্রেফতার, খতিয়ে দেখা হচ্ছে জঙ্গি যোগ
দিল্লিতে এসে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। কয়েক মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোট। সে প্রসঙ্গে বলেন, পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণভাবে করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রসঙ্গেও সোজাসাপটা জবাব দিয়ে অভিষেক বলেন, স্বাভাবিক ঘটনা। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত যত আসন রয়েছে তারচেয়ে অনেক বেশি নেতা-কর্মী রয়েছেন। সকলেই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চান। আবার সকলকে প্রার্থী করাও সম্ভব নয়। তবে টিকিট দেওয়া ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব নেবে তৃণমূল। এলাকায় প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা ও সততা সম্পর্কে যাচাই করে নেওয়া হবে। পঞ্চায়েতে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। মানুষের মধ্যে একটা ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। গ্রামের বহু মানুষ জানেন না কোনটা কেন্দ্রের টাকা, কোটনা রাজ্যের টাকা। ফলে দু’ভাবে মোকাবিলা করতে হচ্ছে রাজ্যকে। প্রথমত মানুষকে বোঝাতে কী কারণে প্রকল্প থেমে আর দ্বিতীয়ত কেন্দ্রে বারবার দরবার করে টাকা আদায় করতে হবে। প্রকল্প চালু করতে হবে। বিগত দুটি অর্থবর্ষে প্রকল্প খতিয়ে দেখতে ১৫১টি কেন্দ্রীয় দল এসেছে। যদিও তারা কোনও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। সংসদের অধিবেশন শেষ হলে প্রত্যেকটি সাংসদ এলাকায় গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বেন।
আরও পড়ুন-ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে প্রথমবার বাংলায় স্পাইডারম্যান
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে অভিষেক বলেন, ৯ বছরেও হিন্দু সমাজকে বিপন্মুক্ত করতে না পারায় মোদির পদত্যাগ করা উচিত। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার সময় বলেছিলেন হিন্দুরা বিপদে রয়েছে। আজও তাই বলছেন। পদত্যাগ করা উচিত মোদির। রামচন্দ্র ত্যাগ, সংযম, কৃচ্ছসাধনের প্রতীক। অস্ত্র হাতে রামের তোপধ্বনী দেওয়া আরাধনা নয়। বাংলায় মেরুকরণের রাজনীতি কাজ করছে না বলেই বিজেপি হাওড়া বা রিষড়ায় উস্কানি দিচ্ছে। কড়া হাতে সরকার দমন করবে।