নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি: ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে দিল্লিতে এসে হুঁশিয়ারি দিয়ে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আর তার ঠিক পরদিনই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে (Giriraj Singh) সংসদভবনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অন্য তৃণমূল সাংসদরা ঘিরে ধরে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা এবং সাংসদদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ‘এড়িয়ে’ যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। সংসদে এলেও বুধবার তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়িয়ে যান। একইভাবে বৃহস্পতিবারও তিনি সংসদে আসেন। তা দেখে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ট্রেজারি বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। তখন তাঁর সঙ্গে যান মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল, আবু তাহের সহ অন্য তৃণমূল সংসদরাও। তৃণমূল সাংসদরা গিরিরাজ সিংকে (Giriraj Singh) ঘিরে ধরে প্রশ্ন করেন, আগাম সময় নেওয়া থাকলেও কেন তিনি তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেননি। এমনকী প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিও সেখানে ছিলেন না। তাই মন্ত্রকের সচিবের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল সাংসদরা।
আরও পড়ুন-প্যান-আধার সংযোগে যত দেরি, জরিমানা তত বেশি
বৃহস্পতিবার সংসদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরেই সেখানে গিরিরাজ সিংকে দেখতে পান তৃণমূল সাংসদরা। তখনই তাঁর সামনে গিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা। গিরিরাজ সিংকে কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদরা বলেন, আপনি তো কাল বিহারে ছিলেন? তিনি জবাবে বলেন, বিহার থেকে ফিরতে আর কতক্ষণ সময় লাগবে? দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেননি, সে প্রশ্ন তোলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রীকে তিনি গতকালের বৈঠকের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে বলেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১৫ দিন পর ফের বৈঠক ডাকার কথা হয়েছে। গিরিরাজ সিং জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে যেসব বিষয় সম্পর্কে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে, সেগুলি এলে পরবর্তী আলোচনা হবে। যদিও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মনরেগার টাকা না পেয়ে ক্ষুধার সঙ্গে লড়াই করছেন ক্ষুধার্ত মানুষ, তাই আলোচনা যেমন চলছে, চলবে। আগামিকালের কথা ভাবতে হবে। ১০ থেকে ১৫ দিন পর ফের বৈঠক ডাকার কথা হয়েছে। সেখানে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা যাবে না। অবিলম্বে যাতে সমস্যার সমাধান হয় এবং বাংলার বকেয়া টাকা পাওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। তৃণমূল সাংসদের স্পষ্ট উত্তর, যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করুন। কিন্তু সবার টাকা এইভাবে আটকে রাখা যাবে না। বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন গিরিরাজ সিং। যদিও তাঁর আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের আর এক সাংসদ অসিত মাল এ বিষয়ে বলেন, গিরিরাজ সিং বুধবারেও সংসদে ছিলেন, বৃহস্পতিবারও সংসদে ছিলেন, তা সত্ত্বেও তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়িয়ে গেলেন। এর থেকেই বোঝা যায় রাজ্যের বকেয়া পাওনা নিয়ে তাঁর কাছে কোনও সদুত্তর নেই।