মণীশ কীর্তনিয়া: কর্মসংস্কৃতি, স্থির লক্ষ্য, নিখুঁত পরিকল্পনা এবং ম্যান ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেই এসেছে দেশের মধ্যে সেরার সেরা স্বীকৃতি। আজকে যে চোখ ঝলসানো সাফল্য দেখছেন, তা একদিনে আসেনি। এই সাফল্য এসেছে আমাদের অফিসার-ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের কারণে। এই কৃতিত্ব তাঁদের। এক নিশ্বাসে কথাগুলি বলে গেলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ২৪ ঘণ্টাও হয়নি বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশের মধ্যে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করে এই সাফল্যের কথা গোটা দুনিয়াকে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন-অভিষেকের সভা ঘিরে উন্মাদনা আলিপুরদুয়ারে
স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তাঁর কথায়, একটা সময় (২০১৯ সাল পর্যন্ত) রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম একটি লস মেকিং সংস্থা ছিল৷ কিন্তু তিনি নিজে, সচিব পি বি সেলিম ও গোটা টিম মিলে পরিকল্পনা করে ধীরে ধীরে সংস্থার উৎপাদন বাড়ানো শুরু করেন। কমতে থাকে লসের পরিমাণ। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মন্ত্রী। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে নিগম ২০৩ কোটি টাকা লাভ করেছে। ২০২১-২২’এ তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০৭ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩’এ তা বেড়ে হয় ৮০০ কোটি টাকা। অরূপ বিশ্বাসের কথায়, লাভ তো বাড়িয়েইছি। সেই সঙ্গে আদানি পাওয়ার, রিলায়েন্স পাওয়ার, টাটা পাওয়ার, ডিভিসি, সিইএসসি-সহ দেশের বাকি বিদ্যুৎ নিগমগুলিকে উৎপাদন ও অন্যান্য মাপকাঠিতে কয়েক যোজন পিছনে ফেলে দিয়েছি। ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় ইলেকট্রিসিটি অথরিটির র্যা ঙ্কিংয়ে আমরা ২৭ নম্বরে ছিলাম। আজ ১ নম্বরে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে চলেই আমরা এই সাফল্য অর্জন করতে পেরেছি। তিনি আমাদের সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। পাশে থেকেছেন। পথ চলতে সাহায্য করেছেন। এই সাফল্যের কৃতিত্ব তাঁরও।
আরও পড়ুন-নববর্ষে কলকাতার বস্তি এলাকায় জ্বলবে সৌর আলো, উদ্যোগ পুরনিগমের
অরূপ বলেন, আমরা আমাদের দফতরে পুরস্কার ও তিরস্কার নীতি চালু করেছি। প্রতি মাসে ভাল কাজে কর্মীদের পুরস্কৃত করেছি(স্টার অফ দ্য মান্থ)। আবার কাজ খারাপ হলে তাঁকে বা তাঁদের ইউনিটকে তিরস্কৃতও করেছি। আমরা যখন লাভ করেছি তখন সকলকে বোনাস দিয়েছি। রাজ্যে আমাদের ২২ হাজার কর্মী রয়েছে। ১৮টি ইউনিট রয়েছে। এর সঙ্গে আমরা সমীক্ষা করে বুঝতে চেয়েছি কোথায় কোথায় আমাদের সমস্যা রয়েছে। সেগুলি চিহ্নিত করে তা অতিক্রম করতে পেরেছি। এসব একদিনে হয়নি।
অরূপ বলে চলেন, ট্রিপিংয়ের সমস্যা, টিউব লিকেজ-লোডিং-আনলোডিংয়ের সমস্যা-ড্যামেজের সমসা, এগুলির টেকনিক্যাল ও আর্থিক ক্ষতির দিক পিন পয়েন্ট চিহ্নিত করে তা থেকে বেরনোর উপায় বের করেছি। তবেই আমরা এগোতে পেরেছি। সব থেকে বড় কথা, আমরা প্রোডাকশন কস্ট কমিয়েছি। একটা সময় আমাদের প্রোডাকশন কস্ট ছিল ৪ টাকা ১৫ পয়সা। সেটা কমে হয়েছে ৮০ পয়সা। ফলে আমরা যে দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারি, বাকিরা পারে না। গত কয়েক বছরে আমরা ২৬ শতাংশ প্রোডাকশন বাড়িয়েছি। তবে এই সাফল্য আমাদের মাথা ঘুরিয়ে দেয়নি। আমাদের আরও এগোতে হবে। কথা শেষ করেন গর্বিত বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।