প্রতিবেদন : সরকারি স্তরে বারবার সতর্কবার্তা দেওয়ার পরেও শিশুদের পিঠে স্কুলের ব্যাগ ক্রমশই বোঝার আকার নিচ্ছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক বা এনসিএফ (National Curriculum Framework) প্রস্তাব দিল, দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত যেকোনও ধরনের লিখিত পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হোক।
জাতীয় স্তরের পাঠ্যক্রম কী হবে সে ব্যাপারে একটা পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব এনসিএফকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। এই দায়িত্ব পাওয়ার পরেই গত কয়েক মাস ধরে দেশজুড়ে বিভিন্ন সমীক্ষা চালিয়েছে এনসিএফ (National Curriculum Framework)। সমীক্ষার ভিত্তিতেই এনসিএফ বলেছে, শিশুদের যদি খেলার ছলে পড়ানো হয় তাহলে তাদের যথাযথ বৌদ্ধিক বিকাশ হবে। শিশু পাঠ্যক্রমকে অবশ্যই খেলার ছলে পড়ার উপযোগী করে তোলা দরকার। এনসিএফ-এর এক আধিকারিক বলেছেন, দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিশুরা যে বৌদ্ধিক স্তরে থাকে তাতে তাদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। বরং শিশুদের সঙ্গে নিয়ে তাদের আগ্রহ ও উৎসাহের ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা প্রয়োজন। বাস্তবের মাটিতে রেখে তাদের মুখে মুখে বলে শেখানো দরকার। শোনানোর মধ্য দিয়ে বোধ তৈরি করার পাঠ-কৌশল নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুন-নাম না করে ফের মোদিকে ভুয়ো ডিগ্রি তোপ কেজরির
এনসিএফ-এর তরফে আরও বলা হয়েছে, দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের কাছে স্কুলের বিশেষ পরিবেশ তৈরি করা দরকার। শিশুদের যেন কখনওই মনে না হয় যে, স্কুল মানে ভয়ের ব্যাপার। বরং ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুলে গিয়ে হইহই করে খেলাধুলার মাধ্যমে লেখাপড়া শিখতে পারে সে বিষয়টিতেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। সেক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হলে শিশুদের উপর মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। যা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক। প্রাথমিক অবস্থায় এই বিপদের বিষয়টি বোঝা না গেলেও ওই শিশুরা যখন কৈশোরে পৌঁছবে তখন তাদের মধ্যে অনেক অস্বাভাবিকত্ব আসতে পারে।
এনসিএফ সাফ জানিয়েছে, প্লে স্কুল থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রমই হল শিক্ষার ভবিষ্যতের ভিত। একবার যদি ভিত দুর্বল হয়ে যায় তবে কখনওই স্বপ্নের অট্টালিকা গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। স্কুল শিক্ষাকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে এনসিএফ। প্রথম ভাগে রয়েছে প্লে স্কুল থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির সিলেবাস আর একরকম। দশম শ্রেণির পর কীভাবে পড়ানো হবে সে ব্যাপারেও এনসিএফ প্রস্তাব দিয়েছে। এনসিএফ-এর দেওয়া এই সমস্ত প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক।