সংবাদদাতা, কাটোয়া : করোনা কাটিয়ে ২ বছর পর ফের স্বমহিমায় বোলান। বোলান-গাজনে বেশি মাতামাতি দেখা যায় পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে। পুরাণের পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনাকে তুলে ধরে বোলান গাওয়ার চল হয়েছে কয়েক বছর ধরে। তবে একেবারে সাম্প্রতিক বিষয়কে উপজীব্য করে ‘দাঁড়া বোলান’ আর পাঁচালি গানের আসর এবার চোখে পড়ল বেশি। তীব্র গরম উপেক্ষা করেও এবারের বোলানের আসরগুলো ছিল ভিড়ে ঠাসা।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে লোকনাথ মন্দিরে একগুচ্ছ কর্মসূচির ঘোষণা মন্ত্রীর
‘ডাকছে দিদি মমতা সময় যে নেই আর/গাঁয়ের বুথে বসেছে দ্যাখো দুয়ারে সরকার/ঘর হবে, চিকিৎসা, মিলবে নানা ভাতা/মমতাদিদি গরিবের মাথায় ধরেছেন ছাতা/রে ভাই ধরেছেন ছাতা।’ বাংলার সনাতন লোকসংস্কৃতি বোলান গানের পালায় এভাবেই ধরা পড়ল রাজ্যের জনমুখী ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের সাফল্যকথা। বোলান গানের আরাধ্য দেবতা মূলত শিব। দাঁড়া বোলান, সখী বোলান, পালা বোলান ও পোড়ো বা শ্মশান বোলান বিভিন্ন ধারা। তবে শ্মশান বা পোড়ো বোলান দেখা যায় কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর, মাসুন্দি, মৌগ্রাম, কাটোয়ার সুদপুর, মুর্শিদাবাদের এড়েরা-সহ বিভিন্ন এলাকায়। এই বোলানের আসরকে শ্মশানের মতো সাজানো হয়।
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড লিগ দিয়ে ট্র্যাকে ফিরছেন নীরজ
শিব, কালী, শকুনি, কুকুর, ডাকিনী, যোগিনী সেজে নানা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বোলানের দল শিবের বন্দনাগান করেন। ঢাক-কাঁসির বোলে জেগে ওঠে নিঝুম রাত। পোড়ো বোলানের শিল্পী সামাই দাস, নির্মল রাজোয়াররা বলছিলেন, ‘পোড়ো বোলান খুবই প্রাচীন প্রথা। কাটোয়া, কেতুগ্রাম বা মুর্শিদাবাদের দু-চারটে গ্রাম ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না।’ তবে বোলান-পালাকাররা বললেন, ‘পুরাণ-আশ্রিত বিষয় নিয়ে পালার থেকে বর্তমান বিষয়ের উপর পালা লেখার বরাত বেশি মিলছে।’ তারই নমুনা : ‘এনটিপিসি হার মেনেছে পাততাড়ি গোটায়/কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ মাঝদরিয়ায়/শিল্প হোক ওই জমিতে চাইছে মনপ্রাণ/মাথায় আছেন মমতাদিদি, মুশকিল আসান/ওরে ভাই মুশকিল আসান।’