অসীম চট্টোপাধ্যায় দুর্গাপুর: ‘যারা একদিন চারা মাছ ছিল, শ্রমিক-শোষণ করে তাদেরই অনেকে আজ হাঙর হয়ে গিয়েছে। তাদের বাড়িতে এখন সুইমিং পুল শোভা পাচ্ছে। একশ্রেণির দুর্নীতিগ্রস্ত ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ঠিকাশ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি থেকে দীর্ঘ দিন বঞ্চিত করা হয়েছে। কাজ হারানোর ভয়ে ঠিকাশ্রমিকরা আইএনটিটিইউসি-র নামাবলি গায়ে থাকা ভণ্ড নেতাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও বলতে পারতেন না। ঠিকাদারদের সঙ্গে গোপনে রফা থাকায় ঠিকাশ্রমিকদের গেটপাশ কেড়ে নেওয়া হত। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে আমরা দুর্গাপুর ইস্পাত কর্তৃপক্ষের কাছে গেটপাশ প্রথারই অবলুপ্তি ঘটানোর দাবি জানিয়েছি।’
আরও পড়ুন-নিষিদ্ধপল্লি, সংশোধনাগারে ভ্রাম্যমাণ পরিষেবা কালনায়
বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর ইস্পাত ঠিকাশ্রমিক কংগ্রেস আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে স্পষ্ট ও ঝাঁঝাল ভাষায় এই কথা উঠে এল আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে। কারখানার মূল প্রবেশদ্বার সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে ঋতব্রতবাবু জোরালো গলায় বলেন, ‘দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ঠিকাশ্রমিক শোষণের ভূরি ভূরি অভিযোগ কলকাতায় বসেই শুনতে পেতাম। তাই গত সপ্তাহে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় ঠিকাশ্রমিকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছি। জুনের মধ্যেই এই প্রথা চালু হয়ে যাবে বলে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।’ উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ঋতব্রতবাবুর উপস্থিতিতে শেখ সাহাবুদ্দিন, শেখ আজিমুদ্দিন-সহ সাত নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন-বিজেপি শুধু ইডি-সিবিআইয়ে আছে, পাথরপ্রতিমায় পরিবহণমন্ত্রী
ঋতব্রতবাবু বলেন, ‘কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার ২৯টি শ্রমআইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে একই বেতনে ১২ ঘণ্টা কাজ করার সর্বনাশা বিল আনতে চলেছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি সিপিএম তথা সিটুর মেকি শ্রমিকদরদি ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘কেরলের সিপিএম সরকার এই কালাকানুন সমর্থন করেছে। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, যতদিন এ রাজ্যের ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন, ততদিন এই সর্বনাশা বিল এ রাজ্যে বলবৎ করতে দেওয়া হবে না।’ বক্তব্য পেশ করেন বিধায়ক ও জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, বর্ষীয়ান শ্রমিকনেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।