প্রতিবেদন : মার্কিন মুলুকের ছায়া মালদহে (Maldah)। পশ্চিমি কায়দায় বোমা ও বন্দুক নিয়ে আচমকাই স্কুলে ঢুকে পড়ল এক বন্দুকবাজ। ঢুকেই সটান ক্লাসে গিয়ে বন্দুক উঁচিয়ে শিক্ষকদের বের করে দিয়ে পড়ুয়াদের পণবন্দি করার হুমকি। হুলস্থুল কাণ্ড স্কুলে। ঘণ্টা দুয়েকের উদ্বেগ, আতঙ্ক, উত্তেজনা। টানটান নাটকের শেষ পুলিশি অপারেশনে। জীবন বাজি রেখে সাদা পোশাকে ক্লাসে ঢুকে বন্দুকবাজকে ঘায়েল করল পুলিশ। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন পড়ুয়া থেকে শিক্ষকরা। উৎকণ্ঠা-শেষে অভিভাবকদের মুখেও হাসি। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত দেব বল্লভকে। গোটা ঘটনার নেপথ্যে দিল্লির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক-শেষে তিনি বলেন, এর নেপথ্যে দিল্লির পরিকল্পনা কাজ করছে। কোনও স্বাভাবিক লোক এই কাজ করতে পারে না। স্কুলে এভাবে কেউ ঢোকে কী করে? বন্দুক নিয়ে যে ঢুকেছিল সে ‘হস্টেজ’ শব্দ শিখল কী করে? তবে পুলিশের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, দায়িত্ব পালন করার সঙ্গে বুদ্ধিমত্তারও পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। নিরাপত্তা বাড়াতে স্কুলে দারোয়ান রাখা এবং পুলিশের সাহায্য নেওয়ারও পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাস্থল মালদহের মুচিয়া চন্দ্রমোহন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এদিন স্কুল শুরুর কিছুক্ষণ পরই স্কুলে ঢোকে অভিযুক্ত। ক্লাস সেভেনের ঘরে গিয়ে টেবিলে অ্যাসিড ভর্তি দুটি বোতল ও বোমা রাখে। এরপরই রিভলভার উঁচিয়ে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের পণবন্দি করার হুমকি দেয়। তার দাবি, ওই স্কুলেরই পড়ুয়া তাঁর ছেলেকে আটকে রাখা হয়েছে। ছেলেকে ফেরত পেতেই পড়ুয়াদের পণবন্দি করার হুমকি দেয় অভিযুক্ত। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে আসেন মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব। ভিড় জমান অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা। বন্ধ হয়ে যায় মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়ক। পুলিশ এসে ক্লাস সেভেন বাদ দিয়ে পড়ুয়াদের বের করতে শুরু করে। তখনই বুদ্ধি খেলে যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিএসপি আজহারউদ্দিনের মাথায়। পুলিশের পোশাক খুলে একজনের টি-শার্ট চেয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ঢুকে অভিযুক্তের সামনে পৌঁছে যান তিনি। অভিযুক্ত কিছু বুঝে উঠার আগেই জীবন বাজি রেখে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন আজহারউদ্দিন (DSP Azharuddin)। তাঁর (DSP Azharuddin) এক আপার কাটেই ঘায়েল হয় বন্দুকবাজ। আটক করা হয় তাকে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দেব বল্লভ (৪৮) মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্ত্রী ঋতা বল্লভ বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা। এর আগেও সে সামাজিক মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে স্থানীয় এক নেতাকে খুনের হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিল।
আরও পড়ুন: অভিষেকের অপেক্ষায় আলিপুরদুয়ার