মোকা-মোকাবিলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা টিম বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু করে দিল দিঘা-সংলগ্ন সমুদ্র উপকূলে। এনডিআরএফের তিনটি দল এসেছে জেলায়। রামনগর ১ ও ২ ব্লকে দুটি এবং হলদিয়া মহকুমা শাসকের অফিসে একটি টিম পাঠানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষে। দিঘায় নেমেই এই দল মোকা-সর্তকতায় সৈকতে মাইকিং করে। আজ ও কাল ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকায় পর্যটকদের এই দুদিন সমুদ্রে নামায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মৎস্যজীবীদেরও দুদিন সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়। এই দল যায় উপকূলবর্তী গ্রামেও। ঝড়ের দুদিন উপকূলবাসী কী করবেন বা করবেন না তা বুঝিয়ে বলেন। দিঘাতে পর্যটকের ভিড় রয়েছে। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে সচেষ্ট তিনটি গ্রুপের মোট ৩৬ জন সদস্য। ইনস্পেক্টর আব্দুল সাত্তার বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখতে শুরু করেছি।’ ঘূর্ণাবর্তের অভিমুখ মায়ানমারের দিকে হলেও তার প্রভাবে উপকূল বরাবর ঝড়বৃষ্টি হবে। তাই আগেভাগেই জেলা প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে। উপকূল বরাবর ৪৩টি মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টার ছাড়াও জেলায় সব স্কুলকে ত্রাণশিবির হিসেবে ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যেই নিমতৌড়িতে জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন অফিসে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। নম্বর ৯০৭৩৯-৩৯৮০৪। প্রতিটি ব্লকে তৈরি রয়েছে সিভিক ডিফেন্স টিম। উপকূলবর্তী ব্লকগুলোকে শুকনো খাবার ও ওষুধ মজুত রাখতে বলা হয়েছে। তৈরি থাকছে নৌকোও। ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ কাটা, সরানো, উদ্ধারকাজের জন্য টিম প্রস্তুত। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পক্ষে বিশেষ পদক্ষেপ হিসাবে প্রতিটি সাপ্লাই এলাকায় তিন-চারটি মোবাইল ভ্যান, সুপারভাইজার ও পর্যাপ্ত কর্মী রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানায়, আবহাওয়ার গতিবিধির উপর নজর রেখেই উপকূল এলাকা থেকে মানুষজন সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে ইয়স সাইক্লোনের সময় প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে সরানো হয়। আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ায় সে সময় জেলায় কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। যদিও ২০২০ সালে মে মাসে আমফান সাইক্লোনে জেলায় ৬ জনের মৃত্যু হয়। ৬ মে জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় মকড্রিলে প্রতিটি দফতর অংশ নেয়। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বিপর্যয় মোকাবিলায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন- “জনসংযোগ যাত্রা’’: ১৭ দিনে ২ হাজার কিমি পথ অতিক্রম অভিষেকের