প্রতিবেদন : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকার (st Martin island- Mocha) দিক পরিবর্তিত হয়ে মূল অংশটি মায়ানমারের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে চলে গিয়েছে। আর এ-কারণেই বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেঁচে গেল বাংলাদেশ। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকা রবিবার (১৪ মে) দুপুর ৩ টের দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আঘাত হানতে শুরু করে। ঝড়ের তীব্রতায় উড়ে গিয়েছে ঘরবাড়ির চালা। উপড়ে গিয়েছে গাছগাছালি। তবে সেন্ট মার্টিনের মূল ভূখণ্ডের কোথাও জলোচ্ছ্বাস হয়নি।
ঘূর্ণিঝড় মোকার আঘাতে টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনে (st Martin island- Mocha) তিন শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত ও ১১ জন আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের মাঝরপাড়া, কোনারপাড়া, গলাচিপা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়ার অন্তত ৩৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে। কয়েকশো গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল, রিসর্ট ও কটেজে অবস্থান করছেন স্থানীয় প্রায় ছয় হাজার মানুষ। বেশির ভাগই শিশু ও নারী।
সেন্ট মার্টিনের মতো টেকনাফের বাহারছরা, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ উপকূল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। ভেঙেছে গাছগাছালি। এতে অনেক সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে সেন্ট মার্টিন ও টেকনাফের মতো বড় প্রভাব পড়েনি কক্সবাজার সদর, মহেশখালি ও কুতুবদিয়ায়।
সেন্ট মার্টিনে দুপুর আড়াইটার সময় ঘূর্ণিঝড় মোকার সর্বোচ্চ ১৪৭ কিলোমিটার গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আজ রাতেই মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেওয়া হবে। কাল যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে, তখন সিগন্যাল তুলে নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সেন্ট মার্টিনের প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর দিয়ে মোকা অতিক্রম করেছে। তবে এর ৫০ শতাংশের বেশি অংশ মায়ানমারের ওপর দিয়ে গিয়েছে। সেন্ট মার্টিনে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অংশ এলে তার বড় ধরনের প্রভাব কক্সবাজার পর্যন্ত থাকত।
আরও পড়ুন-উন্নয়নের অভাব, অভিষেকের কাছে আর্জি বিজেপি কার্যকর্তার
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, রাত সাড়ে সাতটার দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকার দ্বিতীয় ভাগ দেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। এরই মধ্যে ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ সেন্ট মার্টিন অতিক্রম করেছে।
মোকা বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করার পরই রাতের মধ্যে কক্সবাজার-সহ অন্যান্য বন্দরের মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন-সহ কয়েক জায়গায় প্রভাব পড়লেও এবার ভিন্ন অবস্থা খুলনার সুন্দরবন উপকূলে। আকাশে রোদের ঝলকানি আর মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় এলেই সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকায় একদিন আগেই বৃষ্টি শুরু হয়। সারাদেশে আর কোথাও মোকার তাণ্ডবের খবর মেলেনি। এমনকী খোদ রাজধানী ঢাকায় আজকের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির ওপরে।