সোমনাথ বিশ্বাস, শালবনি: মণিপুরের মতো বাংলাতেও জাতিদাঙ্গা বাধাতে চাইছে বিজেপি। এতদিন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে, পারেনি। আমি সামলে দিয়েছি। তাই এবার কুর্মিদের সঙ্গে আদিবাসীদের গন্ডগোল বাধাতে চাইছে। এর জন্য কয়েকজন নেতাকে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি সেই টাকা খাওয়া নেতাদের স্পষ্ট বলে দিতে চাই, আপনারা ভাল হয়ে থাকলে আমি আপনাদের মাথায় ছাতা ধরব। কিন্তু বিজেপির টাকা খেয়ে বাংলায় দাঙ্গা বাধাতে চাইলে আমি রেয়াত করব না।
আরও পড়ুন-পরপর গ্রেফতার, ষড়যন্ত্র ফাঁস বিজেপি-হার্মাদদের
শনিবার শালবনির অধিবেশন মঞ্চ থেকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন ওই মঞ্চ থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রকে তোপ দেগে বলেন, মোদির হাতে রিমোট কন্ট্রোল থাকলে, আপনার হাতে ইভিএমের কন্ট্রোল আছে, সেখানে বোতাম টিপে প্রধানমন্ত্রী বদলে দিন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বদলে দিন। আদিবাসী কন্যা বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভেঙেছে। আমি ওকে দিয়ে অনেক কাজ করাই। ওর উপর হামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে জঙ্গলকন্যা ও মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করে ক্রুদ্ধ নেত্রী বলেন, ওর গাড়ি ভেঙেছে। অনেক সংবাদমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। অভিষেককে আক্রমণ করতে গিয়েছিল ওরা। তবে আমি এখনও বিশ্বাস করি, আমার কুর্মি ভাইরা এটা করেনি। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে হামলা হচ্ছে। এরা গদ্দারি করে টাকার জোরে জাতিদাঙ্গা লাগিয়ে বাংলাকে শেষ করতে পারবে না, তৃণমূলকেও নয়। আমার একটা হাত কুর্মি হলে আর একটা হাত আাদিবাসী। বাংলায় জাতিদাঙ্গা বরদাস্ত করব না। তবে এত কিছুর মাঝেও জনজোয়ারে ভেসে গিয়েছে নবজোয়ার। পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে এই কর্মসূচিকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কুচক্রীরা সফল হয়নি। মানুষের জনজোয়ারে ভেসে গিয়েছে যাবতীয় ষড়যন্ত্র।
আরও পড়ুন-প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত দিল্লি
বাংলা ভাগ ও বাংলায় আগুন জাতিদাঙ্গা নিয়ে শালবনির সভা থেকে বারবার সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এরা চাইছে পাহাড় আলাদা করে দাও, রাজবংশী-কামতাপুরী আলাদা করে দাও, এখন আবার কুর্মি আর আদিবাসীদের আলাদা করতে চাইছে বিজেপি। জাতিদাঙ্গা বাধিয়ে আগুন লাগাতে চায়। টাকা দিয়ে এসব করছে। রক্ত ঝরবে। দিল্লি থেকে সেনা আসবে। গুলি করবে। কোনও মামলা করতে পারবেন না। আইন আছে। আমি সব সহ্য করতে পারি, কিন্তু রক্ত সহ্য করতে পারি না। আমি চোখরাঙানি সহ্য করি না। আমাকে চমকায় কেন্দ্র। আমি বলি, আর মাত্র ৬ মাস। তারপর কেন্দ্র যা যা দেয়নি, ফিরিয়ে দেব। কিন্তু জাতিদাঙ্গা করবেন না। সাফ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দু’হাজার টাকার নোট বদলের পিছনেও অন্য পরিকল্পনা আছে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের। কারও নাম না করে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শালবনির অধিবেশন থেকে এই জেলায় নিজের দলের নেতা-নেত্রীদের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।