অসীম চট্টোপাধ্যায় দুর্গাপুর: অজয়ের কোলে ছোট্ট গ্রাম টিকরবেতা। কেঁদুলির কদম্বখণ্ডির ঘাট-ছোঁয়া এ গ্রামকে অনেকেই বলেন বীরভূমের ‘খাগড়া’। দুই শতকের ঐতিহ্য বহন করে চলা এ গ্রাম আজ আধুনিক বাজারি সংস্কৃতির চাপে পথ হারাতে বসেছে। অভাব-অনটনের চোরাপথে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের শিল্পীসত্তার অনেকটাই। গ্রামে গেলেই একসময় কানে আসত শিল্পীদের হাতুড়ির ঠুকঠাক, টুংটাং। প্রতি বাড়িতে কাজ চলত কাঁসা-পিতলের। শৈল্পিক সূক্ষ্ম কাজের ছিল বিশ্বজোড়া কদর।
আরও পড়ুন-রক্ষাকবচ পেয়ে মিথ্যাচারের রাজনীতি করে চলেছে গদ্দার
রাজারাজরার বৈঠকখানায় শোভা পেত টিকরবেতার শিল্প। এখানকার শিল্প রাজধানী পর্যন্ত পৌঁছেছিল। ইতিহাসবিদ প্রণব ভট্টাচার্য বলেন, কাঁসাপিতল শিল্পে একদা এর খ্যাতি ছিল তুঙ্গে। ৮০ থেকে ৯০ ঘর কর্মকার শালে কাজ করতেন। নাওয়াখাওয়ার সময় পেতেন না। কর্মদক্ষতা আর কারিগরি জ্ঞান ছিল পরম্পরাগত। বর্তমানে এই শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন শ’খানেক শিল্পী। উখরার রথের বিখ্যাত কারিগর রাধাবল্লভ মেহতরির সমতুল্য শিল্পী এখন পাওয়া যাবে না। এলাকায় নন্দ সালুই, তপন মণ্ডল, উত্তম মণ্ডল, সুজিত সালুই, সুজয় সালুই, বিশ্বজিৎ দে-র মতো দক্ষ কারিগরদের মতে, এই শিল্পে নতুন প্রজন্ম যেভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, তাতে টিকরবেতা প্রাচীন গৌরব অচিরেই হারিয়ে ফেলবে, যদি না রাজ্য সরকার পাশে এসে দাঁড়ায়।