প্রতিবেদন : গঙ্গার বুকে জেগে ওঠা চরের অধিবাসীদের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও নাগরিক পরিষেবার সুযোগ দিতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হচ্ছে। এজন্য জনবসতি বিশিষ্ট চরগুলির সমীক্ষা শুরু করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। মালদা জেলায় গঙ্গার বুকে মোট ২৬টি চর জেগে উঠেছে। এই ২৬টি চরের মধ্যে ছ’টি চরে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের বসবাস রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে এই ছ’টি চরের সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে বলে নবান্নে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন-ব্লাড শুগারে নীরব মৃত্যুর হাতছানি, ৪ বছরে ডায়াবেটিস রোগী বেড়েছে ৪৪ শতাংশ
বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে গঙ্গার বুকে জেগে ওঠা চরের মালিকানা নিয়ে দুই রাজ্যের মতভেদ রয়েছে। সেই বিবাদের মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত জমির মালিকানা স্বত্ব প্রদান করা সম্ভব নয়। তবে সেখানকার বাসিন্দাদের এ রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তার জন্যই ৬টি চরে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। সমীক্ষার পরে সেখানকার বাসিন্দারা স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। তাঁদের ১০০ দিনের কাজ আবাস যোজনার মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে। মালদা জেলার কালিয়াচক-২ ব্লকের তলিয়ে যাওয়া কেবি ঝাউবোনা অঞ্চলে সমীক্ষা শুরু হচ্ছে। ওই অঞ্চলটি এখন চর হিসেবে জেগে উঠেছে। মালদার বুকে বিভিন্ন এলাকা দফায় দফায় গঙ্গাভাঙনের শিকার হয়েছে। প্রচুর জমি তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। পরবর্তীতে অনেকটা জমি চর হয়ে জেগে উঠেছে।
আরও পড়ুন-বাংলায় লেখা হবে ওষুধের মাত্রা, নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার
এরকম প্রায় ৩০টি চর রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ৬টি চরে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ বসবাস করেন। তাঁদের জমির রেকর্ড এখনও পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে। ঝাড়খণ্ড সরকার পরবর্তীতে তাঁদের আধার কার্ড-সহ কিছু নথি দিলেও স্থায়ী সরকারি চাকরি বা উচ্চশিক্ষা-সহ বেশ কিছু সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন ওই চরগুলির বাসিন্দারা। তাই তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী নাগরিক হিসেবে মান্যতা দেওয়ার দাবি তুলে আসছেন। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ভূমি রাজস্ব আইনে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে চরের জমির স্বত্ব হারান সেখানকার বাসিন্দারা। এখন তাঁরা চান পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাম আমলের ওই আইন বিলোপ করে তাঁদের হাতে জমির মালিকানা স্বত্ব প্রদান করুক এবং তাঁদের রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে স্বীকৃতি দিক।