প্রতিবেদন : ক্রমশ জটিলতর হচ্ছে মণিপুরের পরিস্থিতি। লাগাতার হিংসা, শতাধিক মৃত্যু, ঘরবাড়ি জ্বালানোর মত অরাজকতা চলছে বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে। মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষে ঘরছাড়া ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পর রাজ্যে শান্তি ফেরাতে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই শান্তি কমিটি ঘিরেই এবার নতুন করে অশান্তি দানা বাঁধছে পাহাড়ি রাজ্যে। এই কমিটির চেয়ারম্যান হলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন-আইনের অপব্যাখ্যা করে শান্তনু, মতুয়া সমাজকে বিভ্রান্ত করছেন
কমিটির সদস্যদের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের নাম। মুখ্যমন্ত্রীর নামেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। কুকিরা জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর উপর তাঁদের আস্থা নেই। তাই তারা এই কমিটি বয়কট করবে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মুহূর্তে মণিপুরের পরিস্থিতির সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের তুলনা করা যায়। নয়ের দশকে কাশ্মীরে পণ্ডিত সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ যেভাবে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, এখন মণিপুরেও তেমনভাবে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছেন। ঘরছাড়ার সংখ্যা বাড়ছে রোজই।
আরও পড়ুন-ইস্টবেঙ্গলে সই বোরহার
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মণিপুরের সাংসদ আর কে রঞ্জন জানিয়েছেন, হিংসার জেরে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৫১ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। সাড়ে ৩০০টি ত্রাণ শিবিরে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। দ্রুত শান্তি ফেরাতে ইতিমধ্যেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জোরদার তল্লাশি অভিযান চলছে। উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা। চলতি দাঙ্গায় এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও বেসরকারি মতে এই সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি। বহু মানুষ নিখোঁজ।
আরও পড়ুন-সিন্ধুদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ
এদিকে সোমবার কুকিদের যৌথ মঞ্চ স্পষ্ট বলেছে, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের জন্যই রাজ্যে অশান্তি বেধেছে। অথচ তাঁকেই শান্তি কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে। তাঁর নির্বাচন করা লোকজনকেই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটিতে কাদের রাখা হবে সে বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে একবারও আলোচনা করা হয়নি। এমনকী, কমিটিতে যেসব মানুষকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে তাঁরা অনেকেই স্বীকার করেছেন যে, কমিটিতে রাখার ব্যাপারে তাঁদের কোনও সম্মতি নেওয়া হয়নি। এমন এক সমাজসেবী গোষ্ঠীকে কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে যারা কুকিদের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাই এই কমিটিকে মেনে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি দাবি উঠেছে, এই কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকরা তৈরি করুন।