নয়াদিল্লি : দিল্লিতে তখন কৃষকদের আন্দোলন তুঙ্গে। সে সময় একাধিক ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে কৃষকদের আন্দোলন সমর্থন করে মোদি সরকারের তুমুল সমালোচনা করা হত। যে অ্যাকাউন্টগুলি থেকে নানা ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরোধিতা করা হত সেগুলি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের তরফে ট্যুইটার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ওই সমস্ত অ্যাকাউন্ট বন্ধ না করলে ট্যুইটারের কার্যকলাপ ভারতে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-পোড়ানো হয়েছে ২৫৩টি চার্চ, দাবি কুকিদের
নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ তুললেন ট্যুইটারের প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডরসি। বিভিন্ন সময়ে দেশের বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাকস্বাধীনতা খর্ব করার যে অভিযোগ তোলে এবার তা শোনা গেল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও। বাক্ স্বাধীনতা খর্ব করাই শুধু নয়, একইসঙ্গে নজরদারি ও হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠল। সরকারের বিরোধিতা করলেই বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা মোদি জমানায় প্রায় স্বাভাবিক বিষয় হয়ে উঠেছে। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া, সবক্ষেত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় টুঁটি টিপে ধরতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বিরোধীদের সেই অভিযোগ যে এতটুকু ভুল নয়, এবার ডরসির মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন উদ্যোগপতির কথাতেই তা প্রমাণ হয়ে গেল। ইতিমধ্যেই ডরসির এই মন্তব্যকে সামনে এনে মোদি সরকারের কাছে প্রকৃত সত্য জানতে চেয়েছে কংগ্রেস। বাক্ স্বাধীনতা ইস্যুতে সরব অন্য বিরোধীরাও। রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, সরকারি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে মোদি সরকার এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের উপরেও খবরদারি করার চেষ্টা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন-মুশকিল আসান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আরামবাগের তেলুয়ায় শুরু হল রাস্তা তৈরির কাজ
সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন ট্যুইটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন সিইও ডরসি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কোনও বিদেশি সরকার কি কখনও তাঁর সংস্থাকে চাপ দিয়েছিল? উত্তরে ডরসি প্রথমেই ভারতের নাম করেন। তিনি স্পষ্ট বলেন, কৃষক আন্দোলনের সময়ে ভারত সরকার একাধিক ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে চাপ দিয়েছিল। বিশেষ করে কয়েকজন সাংবাদিকের অ্যাকাউন্ট। কারণ ওই সাংবাদিকরা কৃষক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে নিয়মিত মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করতেন। এখানেই শেষ নয়। ডরসি কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন । ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মোদি সরকারের তরফে ভারতে ট্যুইটারের কার্যকলাপ একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। এমনকী, ট্যুইটার কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর হুমকিও দেওয়া হয়। বাস্তবেও তা করে দেখিয়েছিল মোদি সরকার। এই হল ‘বিজেপি শাসিত গণতান্ত্রিক ভারত’।