সংবাদদাতা, তারাপীঠ : তিনদিন আগে ভোপালে প্রধানমন্ত্রী বাংলায় ২৩ হাজার কোটির দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। সেই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Minister Firhad Hakim) বলেন, যারা আসল চোর, তারাই সবাইকে চোর বলে। ফিরহাদ বলেন, দাড়িওয়ালা বলেছেন, দিদি, আপনার ভাণ্ডা ফুট গিয়া। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সেবি কেন তাদের উপর নজরদারি করেনি? সেবি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীন। তাহলে ঘোটালা কার? আমি তো বলব, নীরব মোদি, মেহুল চোকসি, বিজয় মালিয়াদের মতো ঋণখেলাপিদের দেশের সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষের টাকা মেরে বিদেশে পালাতে কারা সাহায্য করেছিল? কয়েক লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে আপনার দল। এদিন পাইকরেও সভা ছিল পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Minister Firhad Hakim)। তারাপীঠে ফিরহাদ মোদিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চব্বিশে আপনি থাকবেন না। তব তেরা কেয়া হোগা? আজ ইসকো ভরো, কাল ইসকো জেল মে ভরো। চব্বিশে সব পাই-পয়সা হিসেব হবে। আরেক মোটা ভাই তো একুশে বলছে ইসবার দোশো পার। হয়েছে পগার পার। এবার সিউড়িতে বলেছে ইসবার পঁইত্রিশ। আমি বলি এবার ফিনিশ। ফিরহাদ কর্মীদের বলেন, মানুষের পাশে যান। যে ভাই বাড়ি পাননি বা একশো দিনের টাকা পাননি, তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলুন, আপনারা কী অন্যায় করেছেন? মোদি সরকার সব টাকা আঁটকে দিয়েছে। মানুষকে বলুন, চব্বিশে পাল্টালে সব পাওয়া যাবে। সব থেকে বেশি কে ছটফট করছে জানেন? এক ভদ্রমহিলা, চোখ দিয়ে জল পড়ছে। আমাকে প্রায়ই বলেন, ববি, টাকা থাকলে সব দিয়ে দিতাম। আজ মিডিয়া মোদির পাবলিসিটি করছে। আমাদের মিডিয়া নেই। আমাদের শক্তি কর্মী। সবুজসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী সহ চুয়াত্তরটি প্রকল্প আমাদের পাবলিসিটি। বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও কোথায় গেল? উজালা গ্যাস এখন আন্ধেরা গ্যাস। মোদিজি, আপনার মনকি বাত শুনে কি হবে? মানুষের মন কি বাত শুনুন। চব্বিশের দেওয়াল লিখন হয়ে গিয়েছে। আর জেনে রাখুন, চাঁদে কলঙ্ক থাকতে পারে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেই। ফিরহাদ বলেন, যাঁরা টিকিট পাননি, তাঁদের দুঃখ হতে পারে। কিন্তু সবার উপরে দল। জেনে রাখবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যায় করতে পারেন না। ৩৩ বছর ধরে তাঁর ছায়াসঙ্গী। প্রথম থেকেই তৃণমূল করার পর দু’বার নমিনেশন পাইনি। আমার সিটটা তাপস পালকে দেওয়া হয়েছিল। দুঃখ হয়েছিল। কিন্তু দিদির উপর ভরসা ছিল। একদিকে কলকাতার মেয়র এবং অন্যদিকে মন্ত্রী। ফিরহাদ বলেন, ভেবে দেখুন, আমরা বাম করতে পারি না, কারণ তারা বর্ধমানের সাঁইবাড়িতে ছেলের রক্তমাখা ভাত মায়ের মুখে তুলে দিয়েছে। তারা কৃষকদের উপর নন্দীগ্রামে ও সিঙ্গুরে গুলি চালিয়েছে। আমিও একসময় কংগ্রেসে ছিলাম। মার্কসবাদ-লেলিনবাদের বিরুদ্ধে গান্ধীবাদ ও সুভাষবাদ নিয়ে লড়াই করেছি। কিন্তু যে কংগ্রেস কর্মী শুধু হাতে ভোট দিয়েছিল বলে তার পাঞ্জা কেটে নেওয়া হয়েছিল, সেই কংগ্রেস এখন করা যায় না। বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি বোঝে না। বর্ণপরিচয় কার লেখা জানে না। আমরা জানি বাংলার মাটি, বাংলার জল। ওরা জানে খুন, রাহাজানি, গুজরাতে কোতল, ইউপিতে এনকাউন্টার।
আরও পড়ুন- এক ঐতিহাসিক যাত্রার অবসান, বন্ধ হয়ে গেল ৩২০ বছরের পুরোনো সংবাদপত্রের মুদ্রণ