প্রতিবেদন : দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মণিপুরে শান্তি ফেরাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। উপদ্রুত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানেন না রাজ্যে কোথায় কী হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্যস্ত বিদেশ সফর নিয়ে। এই অবস্থায় জাতিদাঙ্গায় জর্জরিত মণিপুরে নিয়মিতই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। একাধিক জায়গা থেকে আসছে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে মণিপুরের থৌবালে খাঙ্গাবোক এলাকায় তিন নম্বর রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের শিবিরে চড়াও হয় একদল উন্মত্ত জনতা। তারা জওয়ানদের অস্ত্র লুটের চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন-উনুনে রান্না করে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটপ্রচার প্রার্থীর
রাস্তা আটকে দিয়ে তারা সেনা ট্রাকের যাতায়াতও বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে অসম রাইফেলস ও র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স। তারাই পরিস্থিতি সামাল দেয়। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালালে একজনের মৃত্যু হয়। জখম হয়েছেন ২৫ জন। সেসময় গুলির মুখে বিক্ষোভকারীরা পালিয়ে গেলেও পরে তারা জওয়ানদের ওপর আবারও চড়াও হয়। তারা জওয়ানদের শিবির ও গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেসময় জওয়ানদের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন হামলাকারী আহত হন। জখম হন দুই জওয়ান। বুধবার ভোরে রাজ্যের কাংপোকপি এবং বিষ্ণুপুর জেলাতেও প্রবল গোলাগুলির খবর মিলেছে। তবে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। গত দু’মাস ধরে মণিপুর জ্বললেও এখনও সেখানে কেন্দ্রের তরফে কোনও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়নি।
আরও পড়ুন-সিপিএম-আইএসএফের বোমায় মৃত কিশোর ইমরানকে ঘিরে জনসভায় সরব মন্ত্রী-সাংসদ
অবিজেপি শাসিত রাজ্যে যেখানে সামান্য কারণে মোদি সরকার কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে থাকে, সেখানে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে মণিপুরের ক্ষেত্রে। এমনকী, বিরোধী দলের কোনও নেতা-নেত্রীকেও মণিপুর যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। উপদ্রুত ওই রাজ্যে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মণিপুর যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেই অনুমতি দেয়নি অমিত শাহর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মণিপুরের চলতি হিংসার প্রতিবাদে বুধবার তামিলনাড়ুর ভানারপেটে একটি বিক্ষোভের আয়োজন করে সিটিজেনশিপ প্রোটেকশন মুভমেন্ট নামে এক সংগঠন।
আরও পড়ুন-উন্নয়নের দু’কূল ছাপানো জোয়ার আলিপুরদুয়ারে
এদিন বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে দেন পালায়মকোট্টাই রোমান ক্যাথলিক চার্চের বিশপ মোস্ট রেভ এস অ্যান্টনিস্যামি। বিশপ অভিযোগ করেন, সরকারের মদতেই মণিপুরে দুই মাস ধরে জাতিদাঙ্গা চলছে। রাজ্যে চলতি হিংসা অবিলম্বে বন্ধ করা এবং বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন বা ইউএপিএ বাতিল করার দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা।