প্রতিবেদন : কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা খাসমহলের লিজ জমির মালিকানাস্বত্ব সেই সব জমির বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ব্রিটিশ আমলের ওই সব জমির লিজ সংক্রান্ত জটিলতার পাকাপাকি অবসান ঘটাতে এই সিদ্ধান্ত বলে ভূমি দফতর সূত্রে জানা গেছে। কলকাতা ও সন্নিহিত এলাকায় ৯৯ বছরের জন্য লিজে থাকা খাসমহলের জমির বাসিন্দারা বর্তমান বাজারদরের ১৫ শতাংশ দিলেই তাঁদের মালিকানাস্বত্ব দিতে হবে।
আরও পড়ুন-একুশের প্রচারে হাওড়ায় ট্যাবলোর সূচনা সায়নীর
৩০ বছরের লিজে থাকা বাসিন্দাদের মালিকানা পেতে গেলে দিতে হবে জমির বর্তমান দামের ৭০ শতাংশ টাকা। এর ফলে ওই সব জমির বাসিন্দারা তাঁদের বাস্তুজমির পাকাপাকি মালিকানাস্বত্ব মেলায় নানা সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাবেন। লিজে থাকা খাস জমির মালিকানাস্বত্ব দেওয়ার ব্যাপারে আগেই ছাড়পত্র দিয়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। এবার এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্যের ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতর। সেই বিজ্ঞপ্তিতে কলকাতা ও আশেপাশের এলাকার খাসমহল ছাড়াও রাজ্যের অনান্য প্রান্তের জমির লিজের বিষয়টিও থাকছে। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে কলকাতা ও তার আশেপাশের এলাকায় সৈন্যবাহিনীর বারাক, গোলা বারুদ রাখার গুদাম, ইত্যাদির জন্য বিভিন্ন জায়গা অধিগ্রহণ করেছিল ব্রিটিশ সরকার।
আরও পড়ুন-দিঘা-তমলুক রেলপথে দশফুট গভীর ধস, আতঙ্ক
স্বাধীনতার পরও সেই সমস্ত জমি খাসমহল হিসেবেই সরকারের নথিতে রয়ে গিয়েছে। ব্রিটিশ আমলে এবং তার কিছু পরেও বিভিন্ন সময়ে খাসমহলের জমি লিজে দেওয়া হয়েছে। তবে ব্রিটিশ আমলের লিজে নেওয়া জমির নথি নেই মূল লিজ প্রাপকের উত্তরসূরি বা বর্তমানে বসবাসকারীদের কাছে। ফলে ইচ্ছা থাকলেও সেই জমির যথাযথ ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। এই সমস্ত এলাকায় নিয়মের কড়াকড়ির জন্য জমির হস্তান্তরও সম্ভব নয়। যেমন চা-বাগানের জমির লিজের বিষয়টি রয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। তাতে বলা হয়েছে, চা-পর্যটনের জন্য লিজে দেওয়া জমির মালিকানাস্বত্বের জন্য দিতে হবে জমির বর্তমান বাজার দরের ১১০ শতাংশ টাকা। আর যাঁরা আগেই ৯৫ শতাংশ টাকা সেলামি হিসেবে দিয়ে দিয়েছেন তাঁদের দিতে হবে ১৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন-মত প্রকাশের সময় বাড়াল আইন কমিশন
এ ছাড়া অন্যান্য লিজে নেওয়া জমির মালিকানাস্বত্ব পেতেও লিজ প্রাপককে দিতে হবে ১৫ শতাংশ টাকা। সেলামি না দেওয়া থাকলে, মেটাতে হবে সেই টাকাও। তবে কোনওভাবেই জমির চরিত্র বদল করা যাবে না। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত শুধু যে খাসমহলের জমি লিজে নিয়ে বসবাসকারী পরিবারগুলিরই যে লাভ হবে তাই নয়, এর ফলে উপকৃত হবে রাজ্যের শিল্পক্ষেত্র। বহু সাধারণ নাগরিকও উপকৃত হবেন।