প্রতিবেদন : ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার রাজনীতি বাংলা মানছে না, মানবে না। বাংলার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের হকের টাকা ছিনিয়ে আনতে লড়াই করবে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC Dharna)। দিল্লির বুকে টানা আন্দোলন হবে। বিজেপিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে তাদের ভাতে মারার ঘৃণ্য রাজনীতি বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। লড়াই হবে চোখে চোখ রেখে। নিজেদের হক বুঝে নিতে বাংলা যে প্রস্তুত তা দেখিয়ে দিল রবিবারের ধরনা কর্মসূচি। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ প্রতিবাদে গর্জে উঠল বাংলার মানুষ। কলকাতা-সহ শহরতলি, গ্রামেগঞ্জে দিনভর বৃষ্টি মাথায় নিয়েই কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে পালিত হল প্রতিবাদ কর্মসূচি। দলের নির্দেশ মেনে রবিবার বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত চলল ধরনা। দলের সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, কাউন্সিলর, সাংগঠনিক পদাধিকারী-সহ গোটা বাংলার দলের কর্মী-সমর্থকরা এদিন ছিলেন রাস্তায়। পিছিয়ে ছিলেন না মহিলারাও। উত্তর- দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম যেদিকেই তাকানো হয়েছে দেখা গিয়েছে ধরনামঞ্চে মহিলাদের উপচে পড়া ভিড়। এক কথায়, রবিবার নিজেদের হক বুঝে নিতে গর্জে উঠেছে বাংলা। বুঝিয়ে দিল, এখনও বিজেপি সরকারের সম্বিত না ফিরলে প্রলয় আসন্ন । আগামী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যাবে বিজেপি। বাংলার ভোট নিয়ে বাংলাকে ভাতে মারার রাজনীতি আর চলবে না। গোটা বাংলা জুড়ে রবিবার আওয়াজ উঠেছে— বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও ।
আরও পড়ুন- মণিপুর নিয়ে দাবি: আজ থেকে আবার চাপ বাড়াবে ইন্ডিয়া
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা ও আবাস যোজনার বকেয়া-সহ এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি কেন্দ্রের কাছ থেকে পায় বাংলা। সেই বকেয়া আদায়ে আগামী ২ অক্টোবর থেকে দিল্লির বুকে লাগাতার প্রতিবাদ ধরনা চলবে। বাংলা থেকে যাবেন কয়েক লক্ষ লোক। তার আগে গোটা বাংলা জুড়ে আজ রবিবার ছিল এক প্রকার মহড়া। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ধরনা কর্মসূচিতে ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, জয়প্রকাশ মজুমদার, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তাপস রায়, সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, মালা রায়, বাবুল সুপ্রিয়, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, অরূপ চক্রবর্তী, শান্তি কুণ্ডু, ভোলা চক্রবর্তী, কুণাল ঘোষ, অয়ন চক্রবর্তী, ঋজু দত্তরা। উত্তরের কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ (দিনহাটায়), জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক (হিপি), সুস্মিতা দত্ত শর্মারা বেলা ১২টা থেকে ধরনা শুরু করেন। ওই একই সময়ে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়িতে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বসেন সুমন কাঞ্জিলালরা। শিলিগুড়িতে ধরনায় ছিলেন মেয়র গৌতম দেব ও জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। এভাবে রায়গঞ্জ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সর্বত্র বৃষ্টি উপেক্ষা করে ধরনা কর্মসূচি চলে।
আগামী অক্টোবরে ধরনা (TMC Dharna) কর্মসূচির আগে বিজেপিকে একেবারে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে যেভাবে বাংলার প্রতি আক্রোশে ন্যায্য পাওনা আটকে রাখা হয়েছে তা আসলে বিজেপির কফিনেই শেষ পেরেক হতে চলেছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার বঞ্চনার ইস্যুকে আরও বেশি করে জাতীয় স্তরে আরও বেশি করে তুলে ধরবে তৃণমূল। এ-রাজ্য থেকে ভোট নিয়ে বঙ্গ-বিজেপির মাতব্বররা কেউ সাংসদ, কেউ বিধায়ক হয়েছেন। অথচ যাঁদের ভোটে জিতেছেন তাঁদেরই পেটে লাথি মারার ব্যবস্থা করেছেন । আসলে ভাতে মেরেছেন। বাংলার মানুষ যে আসলে বিষয়টি ভালভাবে নেননি সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তার প্রমাণ পেয়েছে বিজেপি ৷ আগামী লোকসভা নির্বাচনেও তারা হাড়ে-মজ্জায় টের পাবে বাংলাকে অবহেলা, বঞ্চনা করলে কী হয়?