প্রতিবেদন : যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আরও চাপে আচার্য-তথা রাজ্যপাল। এতবড় ঘটনা ঘটল, আচার্যের রিপোর্ট কোথায়? প্রশ্ন তুলে আসরে নামল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কমিশনের তরফে সুদেষ্ণা রায় জানান, কমিশন এরই মধ্যে আচার্যকে চিঠি দিয়েছে। অবিলম্বে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও কড়া পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ঘটনার একটি রিপোর্টও প্রকাশ্যে আনতে বলেছে কমিশন। এর পাশাপাশি কলকাতার নগরপালের কাছেও তাঁরা অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট দিতে বলেছেন। হস্টেলের সিসিটিভি ফুটেজ কোথায় সে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্ত যত এগোচ্ছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসছে।
আরও পড়ুন-বেটি বাঁচাওয়ে খরচ ১২৭০ কোটি! বিজ্ঞাপন ৪০১ কোটি, ডাহা ফেল মোদি
শুক্রবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে আটক করে পুলিশ। রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ২২ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠান। অভিযোগ, ঘটনার দিন রাতে সৌরভ ও সাঙ্গপাঙ্গরা মিলেই স্বপ্নদীপের ওপর চরম শারীরিক ও মানসিক হেনস্তা করে। যার চাপ নিতে পারেননি প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ। হস্টেলের প্রথম বর্ষের একাধিক পড়ুয়ার ফোনালাপের অডিও ক্লিপ ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট আপাতত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এসব চ্যাট ও অডিওর সত্যতা যাচাই না হলেও এর থেকে যাদবপুরের হস্টেলের যে ঘটনা উঠে আসছে তা শিউরে ওঠার মতো। রাত গভীর হলেই জেগে ওঠে যাদবপুরের হস্টেল। সিনিয়রদের মিলিত উদ্যোগে শুরু হয় নতুন ছাত্রদের ওপর নানা অত্যাচার।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
রাতের খাওয়াদাওয়ার পর ডাক পড়ে সিনিয়রদের ঘরে। সেখানে ‘ইন্ট্রো’ দেওয়ার নামে চলে অত্যাচার ও হেনস্তা। শুধু সিনিয়ররাই নয়, এতে যুক্ত অনেক বহিরাগতরাও। হস্টেলে তাদের অবাধ যাতায়াত। সেই সঙ্গে কয়েকজন পাস-আউটও বেআইনি ভাবে ঘাঁটি গেড়ে রয়ে গিয়েছে হস্টেলে। এরাই হস্টেলের স্বঘোষিত ‘বাবা’। নিরাপত্তারক্ষীরা সব জেনেও চুপ। কে থাকবে, কে থাকবে না, কীভাবে থাকতে হবে তা সবই ঠিক করে এই ‘বাবা’ ব্রিগেড। সেদিন রাত আটটা পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু খাওয়ার পর অনেকের মতোই স্বপ্নদীপের ডাক পড়ে সিনিয়রদের ঘরে। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত চলে ‘কাউন্সেলিং’। তারপরই ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা।
আরও পড়ুন-শ্রী অরবিন্দ
ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনও। হস্টেলে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল কি না, না থাকলে কেন ছিল না তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। ধৃত সৌরভকে জেরা করে বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মোট ১১ জন পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় সৌরভ-সহ কয়েকজন পড়ুয়া ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। সৌরভ ছাড়াও স্বপ্নদীপের তিনজন রুমমেট এবং ভিন রাজ্যের এক পড়ুয়ার কথাতেও অসঙ্গতি মিলেছে।