প্রতিবেদন : আমেরিকার হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপের ভয়ঙ্কর দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০০। পুড়ে যাওয়া এলাকাগুলির মাত্র ২৫ শতাংশ অংশে তল্লাশি করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। বাকি ৭৫ শতাংশ অংশ অর্থাৎ সিংহভাগ এলাকাতেই এখনও উদ্ধারকাজ বাকি। ফলে মৃতের সংখ্যা শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা অনুমান করে শিউরে উঠছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দিতে চাননি।
আরও পড়ুন-সংসদে সাসপেনশনের প্রতিবাদে আইনি লড়াই?
‘নো কমেন্ট’, বলে সাংবাদিকের প্রশ্ন এড়িয়ে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন বিরাট বিপর্যয় ও প্রাণহানির পরও প্রেসিডেন্টের এমন দায়সারা মন্তব্যে ক্ষুব্ধ আমেরিকাবাসী। প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও বাইডেন এখনও ওই এলাকা পরিদর্শনে যাননি। এমনকী সেখানে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই বলেই জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে দাবানল-নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকায় বাড়ছে ক্ষোভ।
আরও পড়ুন-বুলডোজার নীতির সমালোচনায় চন্দ্রচূড়
গত মঙ্গলবার মাউইয়ের ঐতিহাসিক শহর লাহাইনায় ছড়িয়ে পড়া দাবানলে ব্লকের পর ব্লক পুড়ে ছাই হয়ে যায়। শহরের বাইরে তৃণভূমিতে প্রথম দাবানল শুরু হয়েছিল। হাওয়াইয়ের পাশ দিয়ে যাওয়া একটি হারিকেন থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৮ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা বাতাসের তোড়ে শুষ্ক তৃণভূমিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন জানিয়েছেন, এক পর্যায়ে তাপমাত্রা ৫৩৮ সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ধাতুর কাঠামোগুলোও গলে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাই নিহতদের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেলেও সেগুলো শনাক্ত করা খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন তারা।
আরও পড়ুন-উত্তরে গঙ্গার জলস্তর ছাড়িয়ে গেল বিপদসীমা
শতাধিক বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এ দাবানলে ২২০০টিরও বেশি ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এগুলোর ৮৬ শতাংশই আবাসিক ছিল। মোট ক্ষতির পরিমাণ ৫৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। এখনও পর্যন্ত গোটা এলাকার মাত্র ২৫ শতাংশ অংশে অনুসন্ধান চালিয়ে ১০০ জনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। আগামী রবিবারের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ তল্লাশি সম্পন্ন হবে বলে মনে করছে প্রশাসন। এদিকে এই দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ ১১৩০ ব্যক্তির একটি তালিকা সোমবার বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মাঝে জো বাইডেনের এমন দায়সারা মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ আমেরিকাবাসী। প্রশাসনের অসংবেদনশীল আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।