প্রতিবেদন: একগুচ্ছ দাবিদাওয়া সামনে রেখে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি করলেন মণিপুরের একদল বিধায়ক। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে হিংসাদগ্ধ উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। জাতিগত বৈষম্য বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে একাধিক দাবি-সহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন মণিপুরের ১০ কুকি ও জো বিধায়ক। চিঠিতে তাঁদের জনজাতি সম্প্রদায়ের জন্য আর্থিক সহায়তা ও উচ্চপদে সরকারি পদ তৈরির দাবি জানানো হয়েছে। ১৬ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বিধায়করা মণিপুরের পাঁচ পার্বত্য জেলা চূড়াচাঁদপুর, কাংপোকপি, চান্দেল, টেংনুপাল এবং ফেরজাউলের জন্য পৃথক মুখ্যসচিব এবং পুলিশ মহাপরিচালকের (ডিজিপি) সমতুল্য পদ প্রতিষ্ঠার অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন-মেডিক্যাল কলেজে অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড
রাজ্যে প্রশাসনিক ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা পাওয়ার নিরিখে মেইতেইদের অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিবাদে বহুদিন ধরেই সরব কুকি-জো জনজাতির মানুষজন। তাঁদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক হিংসায় মেইতেইদের তাণ্ডব বন্ধ করার বদলে উল্টে মদত দিয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
আরও পড়ুন-মন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্য পূর্ত দফতরের বরাদ্দ ৭ কোটি টাকার বেশি
তিন পৃষ্ঠার এই চিঠিতে কুকি-জো সম্প্রদায়ের বিধায়করা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, বর্তমানে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল কুকি-জো জনগণের জন্য মৃত্যু ও ধ্বংসের উপত্যকা হয়ে উঠেছে। সামাজিক বৈষম্য নিরসনে অবিলম্বে পার্বত্য জেলাগুলির জন্য পৃথক প্রশাসনিক পদ তৈরির প্রয়োজন। পাশাপাশি বিধায়কদের তরফে কুকি ও জো উপজাতিদের পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০০ কোটি টাকা অনুদানের আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, মণিপুরে গত ৩ মাস ধরে যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি চলছে তার ভয়াবহ প্রভাব থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে উদ্যোগ নিন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-সিএমও-র অবনমন ও অবসর আদালতে মুখ পুড়ল বিশ্বভারতীর
গত ৩ মে থেকে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে চলতে থাকা সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৬০ জনের বেশি সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। নির্বিচারে চলেছে ধ্বংসযজ্ঞ ও নারী-নির্যাতন। কুকিদের অভিযোগ, এই হিংসার মূলে রয়েছে মেইতেই সম্প্রদায়ের তফসিলি উপজাতি মর্যাদার দাবি, যা মেইতেইদের নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক সুবিধার পাশাপাশি সরকারি চাকরি ও শিক্ষায় সংরক্ষণ প্রদান করবে। কুকি জনগোষ্ঠী এই দাবির তীব্র বিরোধী। সেখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। তাদের অভিযোগ, সমস্যা নিরসনে উদ্যোগী না হয়ে বিজেপি সরকার এই হিংসায় ইন্ধন দিয়েছে।